- বাংলাদেশ
- শ্রমিকদের সুবিধা বাড়াতে পোশাকের ন্যায্য দর জরুরি
বিকেএমইএর অনুষ্ঠানে অভিমত
শ্রমিকদের সুবিধা বাড়াতে পোশাকের ন্যায্য দর জরুরি

প্রতীকী ছবি
তৈরি পোশাক খাতে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। স্বাস্থ্যগত নানা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও শোভন মজুরি পান না তাঁরা। এ জন্য দায়ী পশ্চিমা ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা পোশাকের ন্যায্য দর না দিলে এ দেশের কারখানা মালিকদের পক্ষে শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা বাড়ানো সম্ভব নয়।
তৈরি পোশাক খাতের নারী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন বিষয়ক কর্মসূচি উপলক্ষে সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেছেন সরকারি কর্মকর্তা এবং উদ্যোক্তা রপ্তানিকারকরা। পোশাক খাতের টেকসই উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ন্যায্য দর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিকেএমইএর এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন। তিনি বলেন, অর্থনীতির বড় খাত হিসেবে তৈরি পোশাককে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। বর্তমানে এ খাতের নারী শ্রমিকদের ৪০ শতাংশ রক্তশূন্যতায় ভুগছে। এতে তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি কর্মজীবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিকেএমইএর নারী শ্রমিকদের পুষ্টিবিষয়ক প্রকল্পটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতার কারণেই সরবরাহ চেইনে বৈষম্য তৈরি হয়। সাধারণ শ্রমিকরা বঞ্চিত হন। পোশাকের ন্যায্যমূল্য না পেলে কারখানা মালিকদের পক্ষে শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা বাড়ানো সম্ভব নয়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায্য দরের প্রসঙ্গ তুললেই তারা প্রতিযোগিতামূলক বাজার অর্থনীতির ধুয়া তোলে।
ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. ব্রেন্ড স্পেইনার বলেন, বাংলাদেশের শ্রমিকরা তৈরি পোশাকের প্রাণ। শ্রমিকদের ৬০ শতাংশ নারীর অর্ধেকের বয়স ২০-২৫ বছরের মধ্যে, তাদের পুষ্টি ঘাটতি রয়েছে। অথচ জীবনের জন্য স্বাস্থ্যই প্রথম কথা। ইইউ বাংলাদেশের শ্রমিকদের সুস্থ দেখতে চায়। এ গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্পে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কানাডাভিত্তিক নিউট্রেশন ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী জোয়েল স্পাইসার বলেন, শ্রমিকরা সুস্থ থাকলে তারা খুশিমনে কাজ করে। কারখানার মালিক কর্তৃপক্ষও সন্তুষ্ট থাকে। শ্রমিকদের অপুষ্টিতে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়।
পুষ্টিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সরকার, উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
বিকেএমইএর সহসভাপতি ফজলে শামীম এহসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, জাতীয় পুষ্টি সেবা বিভাগের লাইন ডিরেক্টর ড. আব্দুল মান্নান ও বিকেএমইএর সহসভাপতি মনসুর আহমেদ।
নিট খাতের নারী শ্রমিকদের রক্তস্বল্পতা দূর করা ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় ২০১৯ সাল থেকে ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিস (এনএনএস) ও নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনালের (এনআই) সঙ্গে যৌথভাবে নিউট্রিশন অব ওয়ার্কিং উইমেন প্রকল্প পরিচালনা করছে বিকেএমইএ। সভায় প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাড়ানো-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।
মন্তব্য করুন