বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের আওতায় অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে ইট, বিটুমিন, সিমেন্ট ও রডের দর পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। সরকারি পূর্ত কাজের সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এসব সমগ্রীর দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দর তপশিল সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কারিগরি কমিটির সুপারিশে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের দর তপশিলের চারটি নির্মাণ সমগ্রীকে ২৩ ক্যাটাগরিতে ভাগ করে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এ দর সব দপ্তরের দর তপশিলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। পুনর্নির্ধারিত দরের ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে নির্ধারিত ভ্যাট, আয়কর, শুল্ক ও অন্যান্য কর প্রযোজ্য হবে। তবে এ প্রজ্ঞাপন জারির আগে অনুমোদিত দর তপশিল আগের দরেই বাস্তবায়িত হবে।

নতুন প্রজ্ঞাপনে ইটকে দুই ভাগে ভাগ করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে সবচেয়ে ভালোমানের প্রতিটি ইটের দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ টাকা। আগে ছিল ১০ টাকা। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে এ ধরনের প্রতিটি ইটের দাম ১৩ টাকা, রাজশাহী ও রংপুরে ১২ টাকা ৫০ পয়সা এবং খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে ১২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে ছিল যথাক্রমে ১০ টাকা, ৯ টাকা ৬০ পয়সা এবং ৯ টাকা ৬০ পয়সা। এ ছাড়া অটোমেটিক মেশিনে তৈরি সবচেয়ে ভালোমানের ইটের দর সারাদেশে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ টাকা। আগে ছিল ১১ টাকা ৫০ পায়সা।

বিটুমিনকে ছয়টি ভাগে ভাগ করে দাম পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৬০-৭০ গ্রেডের প্রতি কেজি খুচরা বিটুমিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ টাকা। আগে ছিল ৬৯ টাকা। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে ছিল ৬৯ টাকা। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে ৯৪ টাকা। আগে ছিল ৭০ টাকা।

ঢাকা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৬০-৭০ গ্রেডের প্রতি কেজি পাইকারি বিটুমিনের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ টাকা। আগে ছিল ৬৩ টাকা। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে ৮৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগে ছিল ৬৩ টাকা। রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে ৯১ টাকা। আগে ছিল ৬৪ টাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রেডের ভিন্ন ভিন্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিমেন্টকেও ছয়টি ভাগে ভাগ করে দর পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে সাধারণ মানের পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের প্রতি ব্যাগের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৬০ টাকা। আগে ছিল ৪৯০ টাকা। সারাদেশে একই মানের সিমেন্টের প্রতি ব্যাগের পাইকারি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২০ টাকা। আগে ছিল ৪৪০ টাকা। সারাদেশে অর্ডিনারি কম্পোজিট সিমেন্টের প্রতি ব্যাগের খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২৫ টাকা। আগে ছিল ৪৬০ টাকা। সারাদেশে এই মানের সিমেন্টের প্রতি ব্যাগের পাইকারি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। আগে ছিল ৪১০ টাকা।

রডকে ৯ ভাগে ভাগ করে দর পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। সারাদেশে ৩০০ গ্রেডের রডের প্রতি কেজি খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৩ টাকা। আগে ছিল ৬৮ টাকা। সারাদেশে এই মানের রডের প্রতি কেজি পাইকারি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা। আগে ছিল ৬৫ টাকা। সারাদেশে ৪০০ থেকে ৪২০ গ্রেডের রডের প্রতি কেজি খুচরা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯১ টাকা। আগে ছিল ৭৫ টাকা। সারাদেশে এই মানের রডের প্রতি কেজি পাইকারি দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ টাকা। আগে ছিল ৭২ টাকা। এ ছাড়া গ্রেড অনুযায়ী আরও দুই ভাগে আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাজারে এসব পণ্যের দাম যাই হোক, সরকারি কার্যক্রমে অংগ্রহণকারী ঠিকাদারকে নির্ধারিত মূল্যে অর্থ পরিশোধ করে সরকার। বেশকিছু দিন থেকে বাজারে এসব পণ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদাররা সরকারি কাজে নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন।