'ঘুমালে মানুষ নাক ডাকে কেন? আমরা কার্বন ডাই-অক্সাইড ছাড়ি ও অক্সিজেন গ্রহণ করি কেন? গরমকালে গা ঘামে কেন? আমগাছে ১২ মাস আম থাকে না কেন'- এমন নানা কৌতূহল উদ্দীপক প্রশ্ন ছিল খুদে শিক্ষার্থীদের। বিজ্ঞানের গবেষকদের সামনে পেয়ে নিজেদের সুযোগটা হাতছাড়া করেনি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকরাও সানন্দে জবাব দেন শিক্ষার্থীদের প্রশ্নে। শনিবার সারাদিন জীববিজ্ঞান নিয়ে নানা আয়োজনে মুখর ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক প্রাঙ্গণ। যৌথভাবে এর আয়োজন করে বাংলাদেশ বায়োলজি অলিম্পিয়াড ও সমকাল। এতে কারিগরি সহযোগিতা করে ল্যাববাংলা।
রাজশাহী অঞ্চলের আঞ্চলিক এ উৎসবটি জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও সিনিয়র- এই তিনটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ১৬৫ জন নিবন্ধিত শিক্ষার্থী ১৫০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরে তাদের জন্য ছিল উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেখানেই তারা তাদের নানা জিজ্ঞাসা সম্পর্কে প্রশ্ন করে। তাদের এসব প্রশ্নের উত্তর দেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক জালাল উদ্দীন সরদার, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক আশাদুল ইসলাম, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক শীতাংশু কুমার পাল, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মাহবুব হাসান, কামরুল হাসানসহ আরও অনেকে।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে মেডেল ও সনদপত্র দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের হাতে মেডেল ও সনদ তুলে দেন সমাজসেবী শাহীন আকতার রেণী। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক হাবীবুর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন।
এ সময় সমাজসেবী শাহীন আকতার রেণী বলেন, আজকের উৎসবে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছুই শিখতে পেরেছে। তাদের জন্য শিক্ষাটা অনেক সহজ। আমাদের সময় এত সহজ ছিল না। আমরা এমন উৎসব পাইনি।
এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। পায়রা উড়িয়ে উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন- উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, জীববিজ্ঞাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক শহিদুল আলম। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হাবীবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- কৃষি অনুষদের ডিন অধ্যাপক আব্দুল আলীম, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক জালাল উদ্দীন সরদার, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম, সমকালের রাজশাহী ব্যুরোপ্রধান সৌরভ হাবিব প্রমুখ। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা, সমকালের পতাকা ও বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অনুষ্ঠানের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার সমকালের প্রশংসা করে বলেন, সমকাল মানুষের জন্য কাজ করে; যা অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য। এমন কাজের জন্য আমি আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই। আগামীর প্রজন্মের জন্য শিশুদের তৈরি করার এমন উৎসব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাবি প্রতিনিধি