বাংলাদেশের যে কোনো অর্থনৈতিক অঞ্চলে ভোজ্যতেল কারখানা স্থাপনে আর্জেন্টিনার উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে গতকাল সচিবালয়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দেশটির সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ আহ্বান জানান তিনি।চুক্তিতে সই করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান্তিয়োগো আন্দ্রেস ক্যাফিয়েরো।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এমওইউর ভিত্তিতে কিছুদিন পর টিসিবির সঙ্গে আর্জেন্টিনার আরেকটি চুক্তি হবে, যার ভিত্তিতে টিসিবি সরাসরি পণ্য আমদানি করতে পারবে। বর্তমানে টিসিবি দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি আমদানিকারকদের কাছ থেকে পণ্য কিনে থাকে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানো বিশেষত তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে দুই-এক বছরের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ আর্জেন্টিনা থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল ও চিনি আমদানি করে। আর্জেন্টিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে কারখানা স্থাপন করে ভোজ্যতেল বাজারজাত করলে তুলনামূলক কম মূল্যে তা সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এক প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি কর্মীরা ভিসা ছাড়া আর্জেন্টিনা ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। ভবিষ্যতে সাধারণ নাগরিকরাও এ সুবিধা পেতে পারেন।

আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফুটবলকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক রয়েছে। এখন বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়বে । বাংলাদেশ সয়াবিন তেল, গমের পাশাপাশি সানফ্লাওয়ার তেলও আমদানি করতে পারে। বাংলাদেশের মেডিকেল পণ্যের বেশ সুনাম রয়েছে। বাংলাদেশে রপ্তানিমুখী শিল্পে আর্জন্টেনা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৮০ কোটি  ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ আমদানি করে ৭৯ কোটি  ডলারের পণ্য। বিপরীতে রপ্তানি করে মাত্র ১ কোটি ডলারের পণ্য।

অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিপু মুনশিকে তাঁদের জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি, অলিভ অয়েল ও আচার উপহার দেন। অন্যদিকে টিপু মুনশি পুরোনো দিনের ঢাকার ওপর চিত্রকর্ম এবং পাট ও চামড়ার কিছু পণ্য উপহার দেন।