স্বপ্নের বিকেএসপিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি হতে পারছে না আদিবাসী মেয়ে অনামিকা রানী উঁরাও। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে চূড়ান্ত খেলোয়ার (বালিকা) হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের প্রত্যন্ত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির দরিদ্র পরিবারের এই শিক্ষার্থী।

উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ক্ষিরপোতা গ্রামের অনন্ত চন্দ্র উরাঁওয়ের মেয়ে বিষমডাঙ্গা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অনামিকা। নিহার রঞ্জন সরকার এর পরিচালনায় সিরাজগঞ্জ  জেলা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী প্রমিলা ক্রীড়া একাডেমির নিয়মিত খেলোয়াড় সে। ৩০ হাজার টাকার অভাবে বিকেএসপিতে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার।

মুজিব শত বর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে মা, বাবা সহ বসবাস করে অনামিকা। তার বাবা অনন্ত চন্দ্র উরাঁও দীর্ঘদিন যাবত পক্ষাঘাত রোগে শয্যাশায়ী। মা মালতী রানী এলাকার একটি ইটভাটায় ও ফসলী মাঠে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে কোন মতে স্বামীর চিকিৎসা, মেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও সংসার চালিয়ে আসছেন। 

অনামিকা উঁরাও জানায়, বিকেএসপিতে ভর্তির শেষ তারিখ আগামী ৫ মার্চ। ভর্তি ফি বাবদ ব্যাংকে সাত হাজার পাঁচশত সত্তর  টাকা, বিকেএসপি অফিসে নগদ জমা চার হাজার একশত পঞ্চাশ টাকা দিতে হবে। পাশাপাশি আনুসঙ্গিক চার সেট পোষাক, দুই জোড়া জুতা, দুই সেট খেলার বুট, ট্রাংক, ট্রলি, স্কুল ব্যাগ, দুই সেট জার্সি ও অন্যান্য ব্যয় বাবদ আরো প্রায় ১৫ হাজার টাকাসহ এখন সব মিলে ৩০ হাজার টাকার মতো প্রয়োজন। 

অথচ এখন অনামিকার মায়ের পক্ষে ৩০ হাজার টাকার যোগান দেওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আর মা একদিন কাজ না করলে সংসারে হাঁড়ি জ্বলবেনা, বাবার ঔষধ কেনার পরিস্থিতিও নেই অবস্থাটা এমন। 

অনামিকার মা মালতি কাঁন্না ভেজা কন্ঠে সমকালকে জানান, সত্যি বলতে তাঁর সামর্থ নেই এত টাকা খরচ করে মেয়েকে বিকেএসপিতে ভর্তি করানোর। তাই সমাজের উদীয়মান খেলোয়াড় হিসাবে অনামিকা উরাঁও এর স্বপ্ন পূরণের জন্য সমাজের ক্রীড়ামোদী, বিত্তবান  ও দানশীল ব্যক্তিগণকে আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়ানোর জন্য তিনি অনুরোধ করেন।

এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বলেন, অবশ্যই আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু আর্থিক সাহায্য দিবো। পাশাপাশি অন্য কেউ অনামিকা উঁরাওয়ের জন্য সাহায্যের হাত বাড়ালে স্বাগত জানাবো।