দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ৯০ হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন আছে। এসব মামলার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে ‘সলট্র্যাক’নামে সফটওয়্যার চালু করতে যাচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়। এ সফটওয়্যারের মাধ্যেমে যে কোনো সময় সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থাগুলোর করা মামলার অগ্রগতি ও সর্বশেষ অবস্থা জানা যাবে। সংশ্লিষ্ট মামলার বিষয়ে সলিসিটর, অ্যার্টনি জেনারেল কার্যালয় এবং বিভিন্ন পক্ষের মতামত প্রদানসহ ফাইল প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিষয়ে সফটওয়্যারটিতে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকবে। এসব কার্যক্রম তদারকির জন্য এরই মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইংসহ সরকারি সব দপ্তরেই নিযুক্ত করা হয়েছে একজন করে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর কলেজ রোডে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ সফটওয়্যার কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নিজেদের ড্যাশবোর্ড ব্যবহার করে মামলা সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবে।
মন্ত্রণালয় ও সলিসিটর কার্যালয়সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সফটওয়্যারের মাধ্যমে সরকারি মামলাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হলে সলিসিটরসহ বিভিন্ন দপ্তরে ফাইল প্রস্তুতসহ নানা কারণে মামলা ফেলে রাখার আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অনেকাংশে কমে আসবে। ফাইল গায়েব হওয়ার যে অভিযোগ পাওয়া যায়, তাও থাকবে না। কারণ, সফটওয়্যারের মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান মামলাসংশ্লিষ্ট তথ্য ও অন্যান্য বিষয় যুক্ত করার পাশাপাশি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। প্রশাসনিক বিলম্ব থাকলে সেটি চিহ্নিত করা যাবে।
জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সমকালকে বলেন, উচ্চ আদালতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ৯০ হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন আছে। ‘সলট্র্যাক’ নামের এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো নিজ নিজ মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারবে। কোনো জটিলতা থাকলে মামলার বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপও তারা গ্রহণ করতে পারবে। সফটওয়্যারটি উচ্চ আদালতে ঝুলে থাকা সরকারের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলেও মনে করেন তিনি।
যেভাবে কাজ করবে সলট্র্যাক: সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে প্রথমেই https://soltrack.gov.bd লগইন করে সলিসিটর অনুবিভাগের কেস ট্র্যাকিং সিস্টেম রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে হবে ব্যবহারকারীকে। এ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান, ব্যবকারকারীর নাম, ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর দিয়ে পাসওয়ার্ড সংযুক্ত করতে হবে। পরে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারী মামলাসংশ্লিষ্ট তথ্যাদি যুক্ত করার পাশাপাশি গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। সফটওয়্যারে সরকারের ৫৮টি মন্ত্রণালয়, ৬৪ জেলা প্রশাসক কার্যালয়, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, অধিদপ্তর, দপ্তর ও সংস্থাগুলোর নাম ও শাখা সন্নিবেশ করা হয়েছে।