কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মধ্যে খর্বাকায় ও কৃশকায় শিশু জন্মের হার কমেছে। একই সঙ্গে এই জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্লোরিনযুক্ত ট্যাপের পানির ব্যবহার, টয়লেট ব্যবহার, স্যালাইন এবং টিকা নেওয়ার হারও উল্লেখযোগ্যভাব বেড়েছে।

আইসিডিডিআর,বি এবং ইউনিসেফের ‘জরুরি স্বাস্থ্যসেবা (তীব্র পানির মতো ডায়রিয়ার জন্য প্রস্তুতি ও সাড়া প্রদান) ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের ক্যাম্পে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে কলেরা নজরদারি’ শীর্ষক প্রকল্পের ফলাফল তুলে ধরতে আজ রোববার এক সেমিনারে বক্তারা এসব তথ্য জানান। 

কক্সবাজারের লং বিচ হোটেলে এ সেমিনারে ইউনিসেফের হেলথ স্পেশালিস্ট ডা. মাইনুল হাসান, ডা. হোর্হে মার্টিনেজ, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, সরকারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিশেষ অতিথি ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন আইসিডিডিআর,বির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় এ প্রকল্পের মাধ্যমে রোগের নজরদারি, চিকিৎসা, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং টিকাদানের মাধ্যমে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ করার লক্ষ্যে ২০১৮ সাল থেকে দুই হাজার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। টেকনাফে পাঁচটি ডায়রিয়া চিকিৎসাকেন্দ্র (ডিটিসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা ২০১৯ এর ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে। 

আইসিডিডিআর,বির নিউট্রিশন অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সায়েন্স বিভাগের ইমেরিটাস সায়েন্টিস্ট ড. এএসজি ফারুক ডায়রিয়া চিকিৎসাকেন্দ্রভিত্তিক নজরদারির ফলাফল উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে খর্বাকায় (বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা), কৃশকায় (উচ্চতার তুলনায় কম ওজন) ও ওজন স্বল্পতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেছে। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এটি আরও বাড়াতে টিকা দেওয়ার পাশাপাশি পানি ও স্যানিটেশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা এবং বিস্তৃত নজরদারি নিশ্চিত প্রয়োজন।

আইসিডিডিআর,বির ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র ডিরেক্টর ড. ফেরদৌসী কাদরী বলেন, এখন পর্যন্ত ৯ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিভিন্ন রোগের ৩৭ লাখ ৬৫ হাজার ৪৯৯ ডোজ টিকা পেয়েছে এবং তাদের কাছাকাছি বসবাসকারী ৫ লাখ ২৮ হাজার ২৯৭ স্থানীয় ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৬৮৮ ডোজ মুখে খাওয়ার কলেরা টিকা পেয়েছে। তাহমিদ আহমেদ বলেন, শরণার্থী শিবিরে ভবিষ্যতে প্রাদুর্ভাব রোধ করার জন্য টেকসই প্রচেষ্টা প্রয়োজন।