রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে শ্রমিকদের মৃত্যুর ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম-এসএনএফ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একইসঙ্গে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম জানায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন (২০০৬) অনুযায়ী নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও যথাযথ সুরক্ষা যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা না রাখা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাবে একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটে চলেছে। 

এছাড়া ফোরাম উপরোক্ত সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়াসহ নিহত ও আহত শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (লস অফ ইয়ার আর্নিং) অনুসরণ করে ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের দাবি জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন: ভবন মালিক দুই ভাইয়ের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ

ফোরাম জানায়, যত্রতত্র অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, কারখানা গড়ে তোলা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব বা অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বারবার এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ইতোপূর্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।

গত মঙ্গলবার ঢাকার গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবনে বিকেল পৌনে পাচঁটার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট এখনো তাদের উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা ২১ এবং আহত শতাধিক। এ ঘটনায় আহত ও নিহতের অনেকেই শ্রমজীবী মানুষ।

এর আগে গত ৫ মার্চ রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং ৪০ জন আহত হয় এবং গত ৪ মার্চ শনিবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কদম রসুল এলাকায় সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ২৩ জন আহত হয়। 

এর আগে ২০২১ সালের ২০ এপ্রিল আরমানিটোলার একটি ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের গুদামে আগুন লাগার ঘটনায় নিরাপত্তাকর্মীসহ পাঁচজন নিহত এবং ২২ জন আহত হন। এরপর ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনে রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারায় ৭১ জন। এছাড়া ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীর নবাব কাটরায় রাসায়নিকের গুদামে লাগা আগুনে ১২৪ জন মারা যান।