বেসরকারি উদ্যোক্তারা কাজের জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত ও দক্ষ লোকবল না পেয়ে তাঁদের বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ উচ্চ বেতন দিয়ে বিদেশ থেকেও লোকজন নিয়ে আসছেন । এতে করে পণ্য ও সেবার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুগোপযোগী তথা মানসম্মত স্নাতক তৈরির উদ্যোগ খুবই সীমিত।

বৃহস্পতিবার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) উদ্যোগে আয়োজিত ‘শিল্প-শিক্ষায়তন সংযোগ উন্নয়ন’ বক্তৃতামালার ১৫তম পর্বের মূল বক্তা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান খান চৌধুরী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে চলছেন, যা রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের তুলনায় অনেক বেশি। এর পরও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এ যুগে তাঁদের এমন কিছু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে, যেগুলোর সমাধানের এখতিয়ার তাঁদের হাতে নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেই কোর্স কারিকুলামে প্রযোজনীয় পরিবর্তন ও সংযোজনের মাধ্যমে এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি জানান, প্রাণ- আরএফএল গ্রুপ বিশ্বের ১৪৫টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছে। এ গ্রুপের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ১ লাখ ৪৫ হাজার এবং পরোক্ষভাবে ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে।

তিনি তাঁর পিতা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরীকে স্মরণ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য বলেন, গভীরভাবে পরিকল্পনা নিয়ে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে তা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে সফলতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

রাজধানী ঢাকার বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআইইউর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মমিনুল হক মজুমদার। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ডিআইইউর শিক্ষাবিষয়ক ডিন অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল এবং ব্যবসা ও উদ্যোক্তাবৃত্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মাসুম ইকবাল। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিআইইউর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইনোভেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আবু তাহের খান।

ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত যে বিশাল অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে তার জন্য মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরীর মতো মানুষ আমাদের দেশে সব সময়ই স্মরণীয়। আমরা সৌভাগ্যবান, তাঁদের মতো মানুষরা আমাদের অর্থনীতির নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও তাঁর সুযোগ্য সন্তানরা সেই ধারা অব্যাহত রেখেছেন। আশা করি, আমাদের শিক্ষার্থীরা তাঁদের কথা পড়বে, শুনবে এবং সেই অনুযায়ী তারাও একসময় আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী সাহেবের মতো মানুষ ও প্রাণ গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমাদের শেখার অনেক জায়গা আছে। আজকের এ সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান থেকেই সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছে, ব্যবসা করার জন্য টাকার চাইতে বরং কত বেশি পরিমাণ মানসিক শক্তির প্রয়োজন হয়। তিনি জানান, বাংলাদেশের মধ্যে একমাত্র ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতেই উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা বিভাগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এ আয়োজন থেকে অনেক কিছুই অর্জন করেছে বলে তিনি মনে করেন।