- বাংলাদেশ
- বহু বছর পর ফের হল জীবনে প্রাক্তনরা
ঢাবির মুহসীন হল অ্যালামনাইর পুনর্মিলনী
বহু বছর পর ফের হল জীবনে প্রাক্তনরা

অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী ও প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাবেক ছাত্ররা- সমকাল
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ফজল বুলবুল– সবার একটা অভিন্ন পরিচয় আছে। তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের সাবেক ছাত্র।
শুক্রবার এ হলের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী ও প্রথম পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এক মঞ্চে দেখা যায় তাঁদের। আরো ছিলেন আমলা, ব্যাংকার, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও নানা পর্যায়ের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা।
প্রাক্তনরা বহু দিন পর নিজেদের পরিচিত আঙিনায় সময় কাটান, স্মৃতিচারণ করেন। অনেকে হলের সাবেক রুমের সামনে গিয়ে ছবি তোলেন এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডায় মাতেন।
মুহসীন হলের প্রশস্ত মাঠে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এ সময় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মাসুদুর রহমান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক, হল অ্যালামনাইর সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইস্তাক আহম্মেদ শিমুল প্রমুখ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে কোনো প্রধান অতিথি বা গেস্ট বা মন্ত্রীর দরকার নেই। এখানে আমি আসব মুহসীন হলের প্রাক্তন আবাসিক ছাত্র হিসেবে। সবাই আমরা প্রাক্তন। আমরা আড্ডা দেব, একসঙ্গে খাব, পুরোনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করব; হাসি-খুশিতে সময়টা কাটিয়ে দেব।’
সভা শেষে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী লীগ এখানে হস্তক্ষেপ করবে কেন? ডাকসু নির্বাচন প্রতিবছরই হওয়ার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করেনি, এটা তাদের ব্যর্থতা। আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ এখানে নেই।
মাহফুজ আনাম বলেন, ‘১৯৬৭ সালে আমি মুহসীন হলে উঠি। ১৯৭০ সালে হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার সৌভাগ্য হয় আমার। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান বলে মনে করি। হলের সেই আনন্দময় দিনগুলোকে স্মরণ করি। এটা আমার জীবনের অত্যন্ত গৌরবময় একটি অধ্যায়।’
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমাদের সময়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতারা সব একসঙ্গে হলে থাকলেও খুব একটা মারামারি-কাটাকাটি বা বিশৃঙ্খল পরিবেশ হয়নি। ছাত্রদলের মনোনয়ন নিয়ে আমি মুহসীন হল সংসদের ভিপি হয়েছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মুহসীন হলের ছাত্র– এটা আমার গর্ব। ৪০ বছর পর আজকে এখানে এলাম। এই সুযোগ করে দেওয়ায় মুহসীন হল অ্যালামনাইর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’
উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, হলের নবীন ও প্রবীণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও সেতুবন্ধন তৈরিতে এই সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কল্যাণ তহবিল গঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তিসহ আর্থিক সুরক্ষা প্রদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়নে অ্যালামনাই এগিয়ে আসতে পারে।
মন্তব্য করুন