প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচনের সময় অপকৌশল হিসেবে ইন্টারনেটের গতি ধীর করে দেওয়া হলে তা নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে বিতর্কিত করবে। এটা সরকারের অনুধাবন করা উচিত। নির্বাচনে স্বচ্ছতার বিষয়ে জোর দিতে হবে।

নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকদের জন্য সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন নিয়ে আজ সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সিইসি এ মন্তব্য করেন। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মতবিনিময়ে নির্বাচন কমিশন বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) সদস্যরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবীব খান, রাশিদা সুলতানা, মো. আলমগীর. মো. আনিছুর রহমান ও ইসি কার্যালয়ের সচিব জাহাংগীর আলম উপস্থিত ছিলেন। 

বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন দেশজুড়ে মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের গতি ধীর করে দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘এটা (গতি ধীর) নির্বাচন কমিশন করে, না সরকার করে, না কোনো মন্ত্রণালয় করে; তা তিনি জানেন না। তবে সরকার যদি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বিশ্বাস করে, যেই এটি করে থাকুক, নির্বাচনের দিন এই জিনিসগুলো না করলেই বোধ হয় ভালো হবে। কেননা, এতে সন্দেহের উদ্রেক হবে। অনেকেই ভাববেন, অপকর্মের জন্যই এটা করা হয়েছে।’ নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে সিইসি বলেন, অবাধ ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য সংগ্রহের সুযোগ থাকলে স্বচ্ছতা অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত হয়। তথ্য সংগ্রহে সংবাদকর্মীদের বাধা দেওয়া হলে তাঁদের মনে হবে, ‘ডাল ম্যায় কুচ কালা হ্যায়’। 

সিইসি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি– স্বচ্ছতা লাগবে। স্বচ্ছতা না হলে আমরা আবারও গত নির্বাচন যেভাবে বিতর্কিত হয়েছে, হয়তো পুরোপুরি সত্য নয়, সবকিছু অসত্য হতে পারে; কিন্তু একটা পাবলিক পারসেপশন আছে..., স্বচ্ছতার অভাবের কারণেই সেটা হয়ে থাকতে পারে। কাজেই স্বচ্ছতার বিষয়টাতে আমাদের জোর দিতে হবে।’ কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, বর্তমান কমিশন কোনোভাবেই সাংবাদিকদের বিপক্ষে নয়। নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহের কাজে ইসি সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। গণমাধ্যম ব্যবহার করে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত করা গেলে কমিশনেরও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ বেড়ে যায়। বর্তমান কমিশনের অবস্থান কখনোই গণমাধ্যমের বিপক্ষে নয়। 

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে পুলিশি বাধার অভিযোগের বিষয়ে সিইসি বলেন, এমন অভিযোগ কমিশনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। কমিশনের অনুমোদিত সুযোগ সাংবাদিকরা অবশ্যই ভোগ করবেন। বাধা দিলে সেই অভিযোগ কমিশন গুরুত্বের সঙ্গে আমলে নেবে। সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বিধিবিধান সহায়ক হোক। আরও উদার, বস্তুনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়ার ছবি ও সংবাদ পরিবেশন হলে নির্বাচন দেশবাসীর কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য হতে পারে।