- বাংলাদেশ
- অনেক শিশুর জীবন শেষ পানিতে ডুবে
অনেক শিশুর জীবন শেষ পানিতে ডুবে

সম্পর্কে চাচাতো বোন সুমাইয়া জান্নাত ছোঁয়া মনি (৯) ও সুমাইয়া আক্তার রিয়া মনি (৮)। একে অন্যকে ছেড়ে থাকতে পারত না তারা। গত বছরের ১১ এপ্রিল তারা একসঙ্গে পানিতে ডুবে মারা যায়। ঘটনাটি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের চর বাসুরিয়া গ্রামের। ছোঁয়া মনির বাবা সেলিম মিয়া জানান, ছোঁয়া ছিল তাঁর প্রথম সন্তান। আর তাঁর ভাই সাইফুলের প্রথম সন্তান ছিল রিয়া মনি। দু’জনই পিংনা মডেল নুরানি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ঘটনার দিন দু’জন মাদ্রাসা থেকে ফিরে দুপুরের খাবার খেয়ে নদীতে গোসলে নামে। সেখানে আগে থেকে থাকা ১০-১২ শিশুর সঙ্গে ছোঁয়া ও রিয়া মাছ ধরছিল। কিন্তু তারা আর উঠে আসতে পারেনি।
গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘সমষ্টি’ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের গণমাধ্যম এবং নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত পানিতে ডুবে মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে। সংগঠনটি জানায়, ২০২০ ও ২০২১ সালে দেশে ৯ বছর বয়সীদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার ছিল যথাক্রমে ৬৫ ও ৭৩ শতাংশ। এ দুই বছরে যথাক্রমে ৮০৭ ও ১ হাজার ৩৪৭ শিশুর পানিতে ডুবে মৃত্যুর খবর সংবাদমাধ্যমে এসেছে। ২০২২ সালে পানিতে ডুবে মৃতদের মধ্যে ৮১ শতাংশের বয়স ছিল ৯ বছরের কম। আগের বছরের তুলনায় এ হার ৮ শতাংশ বেশি। হতভাগ্য এসব শিশুর ৬১ শতাংশ তাদের চতুর্থ জন্মদিনের আগেই মারা গেছে।
সমষ্টি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ২৮২ শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ ছাড়া রংপুরে ১৬০, ঢাকায় ১৪৯, বরিশালে ১৩১, রাজশাহীতে ১১০, ময়মনসিংহে ১০৪, খুলনায় ১০৩ ও সিলেট বিভাগে ৯১ শিশু মারা গেছে। সমষ্টির পরিচালক মীর মাসরুর জামান রনি বলেন, পারিবারিক পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি এবং সহযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বহু শিশুকে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। এই মৃত্যু রোধে পরিবারের সদস্যদের সচেতন হওয়া জরুরি। বিশেষ করে মায়েদের। বাড়ির পাশের পুকুর-ডোবার চারপাশে বেড়া দিয়ে রাখতে হবে।
মন্তব্য করুন