- বাংলাদেশ
- প্রকৌশলী স্বামীর নির্যাতনে আহত ফাতেমার মৃত্যু
প্রকৌশলী স্বামীর নির্যাতনে আহত ফাতেমার মৃত্যু

প্রকৌশলী স্বামীর নির্যাতনে আহত ফাতেমা নাসরিন (৪৫) মারা গেছেন। ঢাকার আগারগাঁওয়ের নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার গভীর রাতে তিনি মারা যান। তাঁকে নির্যাতন করা হয়েছিল গত ৮ মার্চ। ওইদিনই তাঁর স্বামী প্রকৌশলী মির্জা সাখাওয়াত হোসেনকে (৪৯) গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
শনিবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে রওনা হন স্বজনরা।
ফাতেমার স্বজনরা জানান, ফাতেমা-সাখাওয়াতের সংসার ১৯ বছরের। ১৭ বছরের এক কন্যা রয়েছে তাঁদের। দীর্ঘদিন ধরে যৌতুক হিসেবে এক কোটি টাকা দাবি করে আসছিলেন সাখাওয়াত। এ টাকা না দেওয়ায় প্রায়ই ফাতেমাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। সাখাওয়াতের গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড়ের উত্তর মিঠাপুকুরে। তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের হুমায়ুন রোডে থাকতেন। চাকরি করেন ঢাকায় গণপূর্ত বিভাগে। গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে স্ত্রীকে নিয়ে পঞ্চগড়ে যান সাখাওয়াত। সেখানেও তাঁকে মারধর করেন। এ ঘটনায় ১০ জানুয়ারি পঞ্চগড় সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তিনি। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হন সাখাওয়াত। এর পরই ফাতেমা ঢাকার বাসায় চলে আসেন। সাখাওয়াত জামিনে বের হয়ে আসেন ঢাকায় এবং আবারও নির্যাতন করেন।
ফাতেমার বোন আরজিনা বেগম বলেন, গত ৮ মার্চ বিকেলে হুমায়ুন রোডের বাসায় ফাতেমাকে বেধড়ক মারধর করেন সাখাওয়াত। মসলা বাটা কাঠের বাটলা নিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়। বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার সময় তাঁদের মেয়ে ও ফুফাতো বোন বঁটি কেড়ে নেন। খবর পেয়ে একই ভবনের অন্য ফ্ল্যাটে বাস করা তাঁদের ছোট ভাই সাখাওয়াতের বাসায় যান। ফাতেমাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর মাথার পেছনের হাড় ভেঙে গেছে। তাঁকে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ওইদিন থেকেই নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার রাত ১টার দিকে ফাতেমা মার যান।
৮ মার্চ যখন ফাতেমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয় তখনই মোহাম্মদপুর থানায় খবর দেন স্বজনরা। যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে ওইদিনই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ওই রাতেই বোন আরজিনা বাদী হয়ে সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি কারাগারে আছেন।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, স্বামীর আঘাতের কারণে ফাতেমার মৃত্যু হয়েছে। মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।
মন্তব্য করুন