সংবেদনশীল ইস্যু প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় রেখে সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। রোববার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) রজতজয়ন্তীতে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ূন কবির, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক লাইলুফার ইয়াসমিন, ডিক্যাবের সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সাধারণ সম্পাদক ইমরুল কায়েস। 

এতে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সদস্য শেখ শাহরিয়ার জামান ও মীর মোস্তাফিজুর রহমান। সংগঠনের সাবেক সভাপতি রাহীদ এজাজ ও পান্থ রহমান অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ৫২ বছরের ভ্রমণে প্রায় ৩০ বছর কেটেছে সামরিক শাসকের দ্বারা। সামরিক শাসকের লেবাস বা গণতন্ত্রের লেবাসে তারা শাসন করেছেন। ৩২ বছরের মধ্যে ২০ বছর বাদ দিলে এটা খুবই স্বল্প সময়।

কূটনীতি নিয়ে কাজ করা গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আপনাদের কাজের ৩৬৫ দিন বিভিন্ন ইস্যু থাকবে। এর মধ্যে বছরে কিছু উচ্চ পর্যায়ের সংবেদনশীল ইস্যু থাকবে, যেগুলো আপনারা জানলেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে; আপনারা সেগুলো প্রকাশ করবেন কি করবেন না।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কূটনীতিতে ব্যক্তি স্বার্থ বলে কিছুই নেই। বাংলাদেশ বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সেই জায়গায় বাংলাদেশ তার অবস্থানকে ঠিক রেখে আমাদের যে মূলনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’এটাকে ঠিক রেখে কাজ করে যাবে। কূটনীতি, আঞ্চলিক রাজনীতি, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যু বিবেচনায় বিশ্লেষণধর্মী বা গবেষণাধর্মী লেখার অভাব রয়েছে বলেও জানান তিনি।

পররাষ্ট্র সচিব বলেন, কূটনীতিতে অনেক সংবেদনশীল ইস্যু থাকে। সেসব বিষয় কূটনীতিকদের দেখতে হয়। এক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থটা দেখতে হয়। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা দরকার। গণমাধ্যমকেও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় রাখতে হবে।

বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এক ভিডিও বার্তায় ডিক্যাবের সিলভার জুবিলি উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান। মোমেন বলেন, গণমাধ্যমকে বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশনে ভূমকিা পালন করতে হবে। বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে গণমাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির বলেন, একজন সাংবাদিক চাইলেও এখন আর সাধারণ মানুষকে হাল্কা করে নেওয়ার সুযোগ নেই। কেননা, প্রযুক্তির কারণে যে কেউ চাইলে তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। আর এ কারণে সংবাদমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা খুব জরুরি। সাংবাদিকদের পড়াশোনা করতে হবে। শুনে বুঝে লিখতে হবে, যাতে করে মানুষের কাছে সেই গ্রহণযোগ্যতা থাকে।

ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বর্তমানে সাংবাদিকদের বড় চ্যালেঞ্জ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এখানে অনেক তথ্য ঘুরছে। দিন দিন বিভিন্ন ধরণের চ্যালেঞ্জ বাড়ছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে সাংবাদিকদের বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা বাড়াতে হবে।