বুড়িমারী স্থলবন্দরে ফের শ্রমিক ধর্মঘট, অবশেষে প্রত্যাহার

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের বুড়িমারী স্থলবন্দরে শ্রমিকরা আবারও ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। গত দেড় মাসের (৪৭ দিনের) ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনায় ধর্মঘটের ডাক দেয় সাধারণ শ্রমিকরা। এতে মঙ্গলবার দুপুর ১টা থেকে আজ বুধবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সব ধরনের লোড-আনলোড বন্ধ থাকে। পরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বিকেল ৩টার দিকে কাজে ফিরে যায় শ্রমিকরা।

শ্রমিকরা জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সর্দারদের নেতৃত্বে পরিচালিত বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বিপরীতে সাধারণ শ্রমিকরা বুড়িমারী স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সমিতি গঠন করে। এতে সর্দাররা ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার সকালে বেশ কয়েকজন সাধারণ শ্রমিকের পরিচয়পত্র কেড়ে নেয় ও হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিচারের দাবিতে সাধারণ শ্রমিকরা ওইদিন দুপুর থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে গাড়ি হতে পণ্য লোড-আনলোড বন্ধ রাখে। এতে পরদিন (আজ বুধবার) পর্যন্ত পুরো স্থলবন্দরের মাঠে ও আশপাশের সড়কে শত শত গাড়ি লোড-আনলোডের অপেক্ষায় পড়ে থাকে।

এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে লালমনিরহাট সহকারী পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) ফরহাদ ইমরুল কায়েস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামান ছায়েদ, পাটগ্রাম থানার ওসি ওমর ফারুক, বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাহাজুল ইসলাম মিঠু, বুড়িমারী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সফর উদ্দিন, বুড়িমারী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে যান। সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তারা সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে বিকেল ৩টায় কাজে ফিরে যায়।

স্থলবন্দরের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, স্থলবন্দরের শ্রমিক সর্দার ও সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে নানা ধরনের সমস্যা বিদ্যমান। বিশেষ করে এ বছরের গত ৪ ফেব্রুয়ারি ন্যায্য মজুরি ও শ্রমিকদের কেটে রাখা টাকার হিসাবের দাবিতে ধর্মঘট করে সাধারণ শ্রমিকরা। এরপর ২১ মার্চ হতে ২২ মার্চ সংগঠন করাকে কেন্দ্র করে আবারও ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এভাবে ধর্মঘট করায় স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন ক্ষতির মুখে পড়ছে। লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

বুড়িমারী ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুজ্জামান ছায়েদ বলেন, শ্রমিক সর্দার ও সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে সংগঠন করা নিয়ে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়। বুধবার দুপুরে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে সাধারণ শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেয়।

এ বিষয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) গিয়াস উদ্দিন বলেন, শ্রমিক সর্দারদের সঙ্গে সাধারণ শ্রমিকদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে লোড-আনলোড বন্ধ রাখে শ্রমিকরা। এতে প্রায় পাঁচ শতাধিক গাড়ির জট লাগে।’