- বাংলাদেশ
- বিপন্ন প্রজাতির শকুন ও শিয়াল নিহতের ঘটনায় বন বিভাগের মামলা
বিপন্ন প্রজাতির শকুন ও শিয়াল নিহতের ঘটনায় বন বিভাগের মামলা
-samakal-641e5dc93820c.jpg)
ছবি: সমকাল
মৌলভীবাজারে বিপন্ন প্রজাতির শকুন ও শিয়াল নিহতের ঘটনায় মামলা করেছে বন বিভাগ। মামলার বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার বর্ষিজোড়া বিট কর্মকর্তা আবু নঈম মো, নুরুন্নবী এজাহার জমা দিয়েছেন মৌলভীবাজার সদর মডেল থানায়। তদন্ত-পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরই মধ্যে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন), বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি শকুনের শরীরে স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগানো ছিল। আইইউসিএনের গবেষক দল প্রতিদিন শকুনটির চলাফেরা পর্যবেক্ষণ করত। কিন্তু কয়েক দিন ধরে শকুনটির অবস্থান একই জায়গায় ছিল। কোনো সিগন্যাল মিলছিল না। এই অনড় থাকার কারণটি অনুসন্ধান করতে গিয়ে শকুনের মৃত্যুর বিষয়টি ধরা পড়ে। আইইউসিএন গত বুধবার শকুনটির অবস্থান চিহ্নিত করে। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং আইইউসিএনের গবেষক দলটি চিহ্নিত স্থান বড়কাঁপন মাঠ থেকে শকুনের ১০টি মৃতদেহ ও একটি শকুনের দেহাবশেষ উদ্ধার করে। পরে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সেদিন দুপুরে একই মাঠ থেকে আরও তিনটি মৃত শকুন উদ্ধার করে। শকুন ছাড়াও মৃত কুকুর ও শিয়ালের হাড়গোড় পাওয়া যায়।
এদিকে শকুন ও অন্যান্য প্রাণির মৃত্যু সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত জানতে শুক্রবার সকালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, প্রাণিসম্পদ বিভাগ এবং আইইউসিএনের কর্মকর্তা ও গবেষক দল ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে। এ দলে ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী, পাখিবিদ আল্লামা শিবলি সাদিক, জাপানের টোকিও মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির বন্যপ্রাণিবিষয়ক অধ্যাপক রাই সুজুকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক আবদুল আজিজ, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব এবং রোগ প্রতিরোধবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতান আহমেদ, প্রাণিসম্পদ বিভাগ মৌলভীবাজারের ভেটেরিনারি সার্জন নিরোদ চন্দ্র সরকার, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. শাহীনুল হক, আইইউসিএন বাংলাদেশের শকুন সংরক্ষণ প্রকল্পের মুখ্য গবেষক সারওয়ার আলম প্রমুখ। দুপুর সাড়ে ১২টার সময় তারা সেখান থেকে চলে যান।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজারের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র বলেন, এমন নিষ্ঠুর কাজ যারা করেছে, তাদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তবে আমরা ঘটনা তদন্ত করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শিয়াল মারার জন্য বিষ প্রয়োগ করায় এ ঘটনা ঘটেছে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয়দের বিষটোপে বিলুপ্ত প্রজাতির শকুনসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ শকুনগুলো বাঁচিয়ে রাখতে গরু জবাই করে মাংস খাওয়ানো হয়েছে। যে বা যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করেছে।
মন্তব্য করুন