
পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক অঞ্চলের বাখমুত শহর দখলে রুশ বাহিনী ও মস্কোপন্থি ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপের কয়েক মাসের লড়াই এখন অনেকটাই স্থবির। ইউক্রেনের অন্য এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কিংবা হতাহতের খবর পাওয়া গেলেও বাখমুতে সম্মুখ সারির যুদ্ধের খবর খুব একটা আসছে না। এ অবস্থায় শনিবার ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বলেছেন, বাখমুতের পরিস্থিতি ক্রমেই ‘স্থিতিশীল’ হচ্ছে।
ভ্যালেরি জালুঝনি বলেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের ‘অসাধারণ প্রচেষ্টা’ রুশ বাহিনীকে স্থবির করে ফেলেছে। অন্যদিকে, একই দাবি করেছে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও। ইউক্রেনে রাশিয়ার এক বছরের বেশি সময়ের যুদ্ধে বাখমুত দখলই রুশ বাহিনীর জন্য সবচেয়ে দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী। যদিও ওয়াগনার প্রধান গত সোমবার দাবি করেন, শহরটির প্রায় ৭০ ভাগই তাঁর বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। খবর এএফপি ও গার্ডিয়ানের।
যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ গোয়েন্দা আপডেটে শনিবার বলা হয়, এই স্থবির পরিস্থিতি সম্ভবত রুশ বাহিনীর চরম ব্যর্থতার ফল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ওয়াগনার গ্রুপের মধ্যে চলা উত্তেজনা রণাঙ্গনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
যুক্তরাজ্যের দাবি, রুশ বাহিনী এখন পরিকল্পনা বদলে বখমুতের দক্ষিণে আভদিভকা এবং উত্তরে ক্রেমিনা-সভাতোভ সেক্টরের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। এসব এলাকায় অবস্থান জোরদার করতে চায় তারা।
এদিকে, হামলা থেমে নেই ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে। শনিবার অন্তত আটটি অঞ্চলে রুশ গোলাবর্ষণে ১৬ জন নিহত ও ৪৯ জন আহত হয়েছেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
উত্তর ইউরোপ ও উত্তর আটলান্টিকের ভৌগোলিক অঞ্চল নরডিকের দেশগুলো তৎপর হয়ে উঠেছে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায়। সুইডেন, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড আর ডেনমার্কের বিমানবাহিনীর কমান্ডাররা জানিয়েছেন, এ লক্ষ্যে তাঁরা একটি ঐক্যবদ্ধ বিমান প্রতিরক্ষা তৈরিতে সম্মত হয়েছেন।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাবেক বক্তৃতা লেখককে সন্দেহভাজন তালিকাভুক্ত করে তাঁকে খুঁজছে দেশটির পুলিশ। আব্বাস গ্যালিয়ামভ নামে ওই কর্মকর্তা ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত পুতিন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তাঁর বক্তৃতা লেখক ছিলেন। অবশ্য পরে তিনি স্পষ্টভাষী এক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ও বিশ্লেষক হয়ে ওঠেন।
অন্যদিকে, রাশিয়া-চীনের জোটকে অতিমাত্রায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি শুক্রবার বলেন, মস্কোতে পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর তিনি শঙ্কিত নন। চীন কিংবা রাশিয়াকে হালকাভাবে নেয় না যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ দুই দেশের বিষয় অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন