পাবনায় ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পারায় এনজিওর কর্মীদের অপমানে অ্যাসিড পান করা নারী রোজিনা খাতুন মারা গেছেন। আড়াই মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গতকাল মঙ্গলবার রাত ১১টায় ভাঁড়ারা ইউনিয়নের হলুদবাড়িয়া গ্রামের বাড়িতে তাঁর মৃত্যু হয়।

আজ বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।

স্বজনরা জানান, অ্যাসিড পানের কারণে কণ্ঠনালী পুড়ে যাওয়াসহ নানা ধরণের জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গত কয়েক মাস ধরে রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও সুস্থ হননি।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা খাতুন পাবনা সদরের আরিফপুর মহল্লার আমজাদ হোসেনের স্ত্রী। তিনি ‘প্রতিশ্রতি’ নামের একটি এনজিওর দোগাছি কার্যালয় থেকে ৪৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। পরে সাপ্তাহিক ১ হাজার ৩০০ টাকা হারে ঋণের ২৩ কিস্তি ২৯ হাজার ৯০০ টাকা পরিশোধ করেন। এরপর আর টাকা দিতে পারেননি।

রোজিনা খাতুনের ছেলে হৃদয় হোসেন জানান, গত ১২ জানুয়ারি এনজিও কর্মীরা তাঁর মাকে বাড়ি থেকে কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে বিভিন্ন হুমকি ও গালাগালি করা হয়। পরে তিনি বাড়িতে ফিরে অ্যাসিড পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে অপমান ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন তিনি। মামলায় প্রতিশ্রুতির দোগাছি শাখার ব্যবস্থাপক ইয়াহিয়া খান (৪৫) ও মাঠকর্মী শাহীদা খাতুনকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা জামিনে মুক্ত আছেন।

নিহত রোজিনার স্বামী আমজাদ হোসেন বলেন, ঘটনার পর প্রথম কয়েকদিন এনজিওর লোকজন তার স্ত্রীর খোঁজ নিয়েছে। তারপর কোনো কর্মকর্তা আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি।

পাবনা সদর থানার ওসি কৃপা সুন্দর বালা বলেন, এ বিষয়ে মামলা রয়েছে। এটি এখন হত্যা মামলায় পরিণত হবে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি প্রতিশ্রুতি পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মতীন খান সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখা দেন। তিনি দাবি করেন, অপমানে নয়, পারিবারিক কলহের কারণেই ওই নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।