প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা এবং সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদও একই অবস্থান ব্যক্ত করেছে। আজ বৃহস্পতিবার পৃথক বিবৃতিতে সংগঠন দুটি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, শামসুজ্জামান শামসের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ধরনের মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানানো হয়।

নোয়াবের সভাপতি এ. কে. আজাদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, গত কয়েক দিনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের (ডিএসএ) আওতায় কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পদক্ষেপকে আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম আলো সম্পাদক ও নোয়াবের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে এ আইনের ধারা প্রয়োগ তাঁকে হয়রানি করা ও তাঁর পত্রিকার সাহসী সাংবাদিকতাকে ভয় দেখানোর সমান মনে করি। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিএসএর ক্রমবর্ধমান প্রয়োগ আমাদের কাছে শঙ্কাজনক মনে হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ডিএসএ সম্পর্কে আমাদের আপত্তি জানিয়েছি। এ ধরনের আইন মুক্ত মতপ্রকাশ, স্বাধীন সাংবাদিকতা তথা প্রাগ্রসর সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন ও পদ্ধতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, বুধবার এক বিবৃতিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল পরিষদ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে শামসুজ্জামানের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে এ আইনে মামলা করা হয়েছে। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিএসএর আওতায় একের পর এক মামলা দায়ের সংবাদপত্রশিল্প ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত বলে সম্পাদক পরিষদ মনে করে।

সম্পাদক পরিষদ বলেছে, আইনমন্ত্রী এ আইনটির অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনে বিধি সংশোধনের কথা বলেছিলেন এবং সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আশ্বাসের পরও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলো গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে সম্পাদক পরিষদ। এই কাজগুলোকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার হুমকির স্পষ্ট উদাহরণ বলে মনে করে সম্পাদক পরিষদ।