নাটোরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় যুবদলের তিন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। শনিবার দুপুরে এ সংঘর্ষ হয়। 

আহতরা হলেন- কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, যুবদল কর্মী শৈবাল ও রনি ব্যাপারী। গুরুতর আহত অবস্থায় শরিফকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকীদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, দলটির নেতা অ্যাডভোকেট উজ্জ্বল হোসেন সায়েম ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লবসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

জানা যায়, শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শহরের আলাইপুর এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুর সভাপতিতে কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস দুলু। হঠাৎ করেই কর্মসূচিতে হামলা চালান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। 

সংঘর্ষের সময় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা ঘটনাস্থল থেকে তাদের নেতা-কর্মীদের ফিরিয়ে আনেন। পরে তারা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশ করে। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান দাবি করেন, বিএনপি বিনা উস্কানিতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। 

তিনি অভিযোগ করে তিনি বলেন, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু গুলি চালিয়েছেন। তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। 

এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম রমজানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের উপস্থিতিতে আমাদের লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এছাড়া যুবদল নেতা শরিফুল ইসলাম শরিফ, যুবদল কর্মী শৈবাল ও রনি ব্যাপারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। 

সংঘর্ষের পর দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সেখানে হামলার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান দলটির নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু, সদস্যসচিব রহিম নেওয়াজ, সাবেক এমপি কাজী গোলাম মোর্শেদ, কাজী শাহ আলম, দেওয়ান শাহিন, বাবুল চৌধুরী, যুবদল সভাপতি এহাই তালুকদার ডালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনার সময় দুেই রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে এমন খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো গুলি ছোঁড়া হয়নি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।