যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেনকে হলের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতনের তিন দিন পার হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আহত শিক্ষার্থী বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তবে নির্যাতনে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খান মাইদুল ইসলাম বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি পলাতক। তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। অবস্থানও দ্রুত পরিবর্তন করছে তারা। 

এদিকে নির্যাতনের শিকার পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি (এনএফটি) বিভাগের শিক্ষার্থী ইসমাইল হোসেন তিন দিনেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি। এখনও বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষে ফিরতে পারছেন না। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার পলাশপুর গ্রামে। 

ইসমাইল বলেন, হাসপাতাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মসিয়ূর রহমান হলে ফিরেছেন তিনি। তবে এখনও সুস্থ হতে পারেননি। পুরোপুরি শয্যাশায়ী অবস্থায় আছেন। মাথা ও পিঠে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে। ক্লাসে ফিরতে পারছেন না। অথচ নির্যাতনকারীদের কেউ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। এটা ভেবে কষ্ট পাচ্ছেন। অবিলম্বে নির্যাতনকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি চান তিনি। 

গত রোববার ডেকে নিয়ে ইসমাইলকে আবাসিক হলের কক্ষে আটকে রেখে ৫ ঘণ্টা নির্যাতন করে ছাত্রলীগের দুই কর্মী শোয়েব আলী ও সালমান এম রহমান। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। পরে অচেতন অবস্থায় ইসমাইলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় পরদিন কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হলের প্রাধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান জাহিদ মামলাটি করেন। মামলায় সালমান ও শোয়েবকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। 

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ইসমাইলের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল সালমান ও শোয়েব। তারা ইসমাইলকে হত্যার হুমকিও দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার ইসমাইলকে শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের ৫২৮ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে। তারা তাকে বেল্ট, লোহার রড ও পাইপ দিয়ে মারধর ও জখম করে। 

শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করার পর থেকে তাদের আর ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি।