চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কবি সেলিনা আক্তার শেলীকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার এ দাবিতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখা এবং সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পৃথকভাবে সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়।

নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে তিন দফা দাবিতে সমাবেশ করে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফেসবুকের পোস্টে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগার অজুহাতে অধ্যক্ষ সেলিনা আক্তার শেলীকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বহিঃপ্রকাশ। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের ভয় দেখিয়ে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করা হচ্ছে। আইনটির বিতর্কিত ব্যবহার বারংবার আমাদের আশঙ্কাকে ঠিক প্রমাণ করে জনমতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে সেলিনা আক্তার শেলীর বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাতিল করে স্বপদে বহাল এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করার দাবি জানান।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহমদ জসিম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রায়হান উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ, নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রীতম বড়ুয়া, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক উম্মে হাবিবা শ্রাবণী প্রমুখ।

এদিকে সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে নগরীর চেরাগি চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে সেলিনা শেলীকে অবিলম্বে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে পুনর্বহাল এবং তাঁকে হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, শিক্ষকতা জীবনে সেলিনা শেলীর বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ আনতে পারেনি। ঠুনকো একটি বিষয় নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ যে ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।

সমাবেশে একাত্মতা প্রকাশ করে বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি শিল্পীগোষ্ঠী, অদিতি সংগীত নিকেতন, ছাত্র ইউনিয়ন, সুচয়ন ললিতকলা কেন্দ্র, নরেন আবৃত্তি একাডেমি, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর, যুব ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সংগঠন।

এর আগে ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে এক মন্তব্যের পর গত রোববার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে কলেজের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে। বরখাস্তের আদেশে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বিভাগীয় মামলা করার কথাও বলা হয়।