নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার ‘মিডিয়া অ্যান্ড আইটি’ বিভাগের প্রধানকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। তার নাম সাকিব বিন কামাল। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পরে মঙ্গলবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের রিমাণ্ডে নেওয়া হয়েছে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাকিব বিন কামাল একটি বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে। সে শিক্ষকতা ও অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করে আসছিল। পাশাপাশি ২০১০ সাল থেকে সে জামায়াতুল মুসলিমিন ও হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে যুক্ত। উগ্রবাদ মতবাদে দীক্ষিত হয়ে সে সমমনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি গ্রুপ তৈরি করে। গ্রুপটি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করে অর্থ ও সদস্য সংগ্রহ করতে থাকে। ২০১৩ সালে সে বৈশ্বিক উগ্রবাদের উত্থানে নব্য জেএমবি মতাদর্শের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের মতাদর্শ প্রচার শুরু করে। ২০১৫ সালে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তখন কারাগারে তার সঙ্গে পরিচয় হয় জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকক্বিয়ার আধ্যাত্মিক নেতা শামিন মাহফুজের। শামিন তাকে নব্য জেএমবি মতাদর্শ থেকে সরিয়ে তার সংগঠনে কাজ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০১৭ সালে সাকিব কারাগার থেকে বের হয়ে নতুন সংগঠনের কাজ করতে থাকে। শামিনের নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক, কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও মিডিয়া-সিকিউরিটি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় পাহাড়ে সক্রিয় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে তাদের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ক্রয়, রিক্রুটমেন্ট ও সংগঠনের নতুন নাম ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়া’ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, সাকিবের আইটি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার কারণে শামিন মাহফুজ তাকে এই সংগঠনের আইটি ও মিডিয়া বিভাগের দায়িত্ব দেয়। শামিনের নির্দেশে সংগঠনের নিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, গোপন যোগাযোগের অ্যাপ চালানো এবং পাহাড়ে ট্রেনিং ক্যাম্পে নাইট ভিশন সিকিউরিটি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে সাকিব কাজ করে। সংগঠনের মানহাজ ও আক্বিদা ইংলিশে অনুবাদ করে একটি গ্লোবাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে একটি গ্লোবাল অডিয়েন্স তৈরির জন্য কাজ চালিয়ে যায়। এ ছাড়া সংগঠনে গোপনে রিক্রুটমেন্ট এবং অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠির সদস্যদের এই সংগঠনের হয়ে কাজ করার জন্য সাকিব যোগাযোগ করে আসছিল। উগ্রবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম ও রমনা থানায় দু’টি মামলা রয়েছে। ডিএমপির ডেমরা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।