মাদক কারবারিরা অভিনব কৌশল ব্যবহার করে মিয়ানমার থেকে আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) চালান দেশে আনছে। নিজেদের পরিচয় লুকাতে তারা ব্যবহার করছে সাংকেতিক শব্দ। একে অন্যের সঙ্গে কথোপকথনে আইসকে বলা হচ্ছে ‘চা-পাতা’।

এদিকে মাত্র ১২ দিনের মাথায় আইসের সর্ববৃহৎ চালান জব্দ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে চালান জব্দের রেকর্ড ভাঙল। গতকাল শনিবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়ায় সফিউল্ল্যাহ কাটা ও পালংখালিতে অভিযান চালিয়ে ২৪ কেজি আইস উদ্ধার করে র‍্যাব। এ সময় তিনজনকে আটক করা হয়। সর্বশেষ ২৬ এপ্রিল উখিয়ার পালংখালী সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ২১ কেজির চালান জব্দ করেছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, আইস কারবারে বরখাস্ত এক পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। বিজিবির অভিযানে আটক বুজুরুজ মিয়ার আত্মীয় তিনি। এছাড়া ইনান মাঝি নামে আরেকজনও এর সঙ্গে জড়িত। মাদক কারবারে জড়িয়ে ইনান অনেক টাকার মালিক হয়েছেন। মাদক প্রতিরোধ আইনে তাঁর নামে একাধিক মামলা রয়েছে।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আইস কারবারের সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।

কক্সবাজারের একাধিক স্থানীয় ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশি লাভ ও বহন করতে সুবিধা হওয়ায় ইয়াবা কারবারে জড়িত অনেকেই এখন আইসে ঝুঁকছে। মাদক কারবারিরা সাধারণ রোহিঙ্গাদের কম টাকায় আইস বহনের কাজে ভাড়া করে। মিয়ানমার থেকে চালান দেশে ঢোকানোর পর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নেওয়া হয়। এরপর ক্যাম্প থেকে অল্প অল্প করে তা ঢাকায় পাঠানো হয়।

পরিসংখ্যান বলছে, দেশে আইসের বিস্তৃতি বাড়ছে। ২০২১ সালে ৩৬ কেজি আইস জব্দ করা হয়। ২০২২ সালে জব্দ হয়েছে ১১৩ কেজি ৩৩১ গ্রাম। দেশের ইতিহাসে প্রথম ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুর থেকে ৮ গ্রাম আইসসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঢাকায় একটি ল্যাবের সন্ধান মেলে। এরপর ২০১৯ সালের ২৭ জুন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আইসসহ একজন নাইজেরীয় নাগরিককে আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। আইস চক্রে বিদেশি নাগরিকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যায় বাংলাদেশকে এর রুট হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে।