রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলার রায় বাস্তবায়নের বিরুদ্ধে রিট হয়েছে। চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২ আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে এই আবেদন করা হয়েছে। আজ রোববার ওই আসামিদের পক্ষে তাদের ভাই ও স্ত্রী রিট করেন।

রিটে বলা হয়েছে, মামলায় আসামিদের আটক, গ্রেপ্তার ও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার ব্যত্যয় হয়েছে। তাই এক আসামির ভাই ও আরেক আসামির স্ত্রী পৃথক রিট করেছেন। আবেদনে আসামিদের ফাঁসি কার্যকর স্থগিত চাওয়া হয়েছে।

এর আগে ২ মে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি ও যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া এক আসামির আবেদন খারিজের রায় প্রকাশ হয়। এ কারণে আইন অনুযায়ী রায়টি বিচারিক আদালত হয়ে কারাগারে যাবে। তবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইতে পারবেন।

ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রাখা দুই আসামি হলেন- রাবির একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহত ড. তাহেরের বাসার কেয়ারটেকার জাহাঙ্গীর আলম। অপর দুই আসামি জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের স্ত্রীর বড় ভাই আবদুস সালামের যাবজ্জীবনের সাজাও বহাল রাখেন আদালত।

২০০৬ সালে রাবির কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহেরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয়ের জেরে খুন হন তিনি।

এ ঘটনার দু'দিন পর নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি বাদী হয়ে আহমেদ রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামির নামে মামলা করেন। পরে বিচারিক আদালত ২০০৮ সালে চারজনকে ফাঁসির আদেশ ও দু'জনকে খালাস দেন। ২০০৮ সালে বিচারিক আদালতের রায়ের পর নিয়ম অনুযায়ী ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে আসে। এর পাশাপাশি আসামিরা আপিল করেন।

শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল এবং অন্য দুই আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। এর পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামির দণ্ড বাড়ানোর জন্য আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্ট বিভাগের রায় বহাল রাখেন। এরপর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ মে এ মামলায় আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আসামিদের করা আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।