- বাংলাদেশ
- আজমত আমার বাসায় বসে বসে ষড়যন্ত্র করেছেন
সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর আলম
আজমত আমার বাসায় বসে বসে ষড়যন্ত্র করেছেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সত্যটা তুলে ধরার জন্য সিনিয়র নেতাদের অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে চিরতরে বহিষ্কৃত গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ১৮ মাস চোখের পানি ফেলেছি, এখন আর ফেলব না। আমার ক্ষতি করার জন্য আজমত উল্লা খান সব কিছুর সঙ্গেই জড়িত ছিলেন। আমার বাসায় খেয়েছেন এবং এখানে বসেই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন। আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরের ছয়দানার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি যখন দেশের বাইরে গিয়েছিলাম, তখন থেকেই একটা মহল পেছনে লেগে রয়েছে। তারা আমি যেন দল করতে না পারি, তাই বিভিন্ন পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছে। অনেক নেতার কাছে গিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সত্যটাকে বলার জন্য বা আমাকেই বলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। সবাই বলেছেন, তুমি কোনো অন্যায় করনি, তোমার বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু আমি জানি না, কেউ এ বিষয়ে তাঁকে বলেছেন কিনা।
দল থেকে সাসপেন্ড হওয়ার পর মাস চারেক আগে লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আওয়ামী লীগে ফেরেন গাজীপুরের বিতর্কিত নেতা জাহাঙ্গীর আলম। সেই শর্ত ভঙ্গ করে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন না দিয়ে নিজেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে শেষ পর্যন্ত ঋণখেলাপির জামিনদার হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয় তাঁর। বিকল্প হিসেবে নির্বাচনের মাঠে জাহাঙ্গীর তাঁর মা জায়েদা খাতুনকে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করান। জাহাঙ্গীরের এ কৌশলও আওয়ামী লীগের সংগঠনের স্বার্থপরিপন্থি। এর দায়ে গত সোমবার গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীরকে দল থেকে দ্বিতীয়বারের মতো ‘চিরতরে’ বহিষ্কার করে।
বহিষ্কারের পর গতকাল দুপুরে মুখ খোলেন জাহাঙ্গীর। মহানগরের ছয়দানার বাড়িতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমার মা আমাকে জন্মের পর থেকেই ছাত্রলীগ করতে শিখিয়েছেন। ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমি আমার সংগঠনের নিয়মের বাইরে কোনো কাজ করিনি। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশনের মাধ্যমে জানতে পারি, আমাকে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি তো আমার মায়ের একজন সমর্থক মাত্র, তাহলে একজন সমর্থককে কীভাবে বহিষ্কার করা হয়। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাব, তিনি যেন আমাকে দলের একজন সমর্থক হিসেবে থাকার সুযোগ করে দেন। সত্যটাকে প্রমাণ করার জন্য মা-ছেলে মাঠে নেমেছি। কোনো পদ-পদবির জন্য নয়, মানুষ সত্যটা জানুক, তার জন্যই মাঠে নেমেছি।
তিনি আরও বলেন, মেয়র হয়ে দল-মত নির্বিশেষে আমি সবার কাজ করে গিয়েছি। দীর্ঘ তিন বছর কাজ করার পর আমার মেয়র পদটি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এক অন্ধকারের শক্তিতে আর কোনোভাবে আমাকে মেয়র পদে ফিরে যেতে দেওয়া হয়নি। আমি সব সময় সৎ, ন্যায় এবং আদর্শের সঙ্গে চলেছি; কিন্তু আমার ওপর ন্যায়বিচার করা হয়নি। আমি আমার ন্যায়বিচারের জন্য আদালতে গিয়েছিলাম; কিন্তু তারা কালক্ষেপণ করে সময়টা পার করে দিয়েছে।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মা জায়েদা খাতুনকে পাশে বসিয়ে জাহাঙ্গীর সাংবাদিকদের বলেন, এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সেখানে আজমত উল্লা খান এক দিকে দাঁড়িয়েছেন, আরেক দিকে আমার মা দাঁড়িয়েছেন। আমার মা বলেছেন, তুমি সত্যের সঙ্গে থাক, আমার সঙ্গে থাক। এখন যদি আমি মায়ের সঙ্গে না থাকি তাহলে আমার মায়ের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। নারী জাতির সঙ্গে বেইমানি করা হবে। তাই আমি আমার মায়ের পাশে থেকে নির্বাচন করছি। এখন জেলে যাওয়া অথবা মৃত্যু ছাড়া মাকে ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
মন্তব্য করুন