ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভা হয়েছিল ৯ বছর আগে ২০১৪ সালে। এই সংগঠনটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে চার বছর আগে ক্রিকেটারদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে ধর্মঘটের মতো কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে জাতীয় দলসহ দেশের তারকা ক্রিকেটাররা আদতে কোয়াবকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন।

তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল– দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোয়াবের নির্বাচন দিয়ে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটারদের নেতৃত্বে আনা।

আজ শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মিডিয়া প্লাজায় বহুল প্রতীক্ষিত সেই কাউন্সিল ও বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু চার বছর আগে যে তারকা ক্রিকেটাররা নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন, আজকের কাউন্সিলে তাঁরা থাকছেনই না!

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে জাতীয় দলের একটি অংশ দেশে ফিরেছে ১৬ মে। কিন্তু সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান দেশের বাইরে ছুটি কাটাচ্ছেন। আজকের কাউন্সিলে তাঁরা যে থাকছেন না, এটা এক প্রকার নিশ্চিতই।

সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে কেবল মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ দেশে আছেন। তাঁরাও কাউন্সিলে যাবেন কিনা, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।

জাতীয় দলের তারকাদের কাউন্সিলে পাওয়া যাবে না বলে কিছুটা হতাশ কোয়াব সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালও, ‘এখন জাতীয় দলের খেলা নেই। তাদের জন্যই এই ফাঁকা সময়ে আমরা কাউন্সিল আয়োজন করছি। তার পরও তারা যদি না আসে, তাহলে তো করার কিছু নেই। তবে আমার বিশ্বাস, দেশের অধিকাংশ ক্রিকেটারই আজ থাকবেন।’

৯ বছর পর কাউন্সিল হলেও চার বছর আগে সাকিবের ডাকে যেভাবে বর্তমান ক্রিকেটাররা হাজির হয়েছিলেন, আজ তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সিলেটে উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ চলায় ‘এ’ দলের ক্রিকেটারদের আজ থাকার সম্ভাবনা নেই।

কোয়াবের বর্তমান নেতৃত্বেও পরিবর্তন আসার তেমন কোনো ইঙ্গিত মিলছে না। সভাপতি পদে নাঈমুর রহমান দুর্জয়ই থাকছেন। সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালেরও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। তবে সহসভাপতি পদে খালেদ মাহমুদ সুজনের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের কাউকে দেখা যেতে পারে। তবে তারকা ক্রিকেটারদের কাউকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

চার বছর আগের আন্দোলনে কোয়াব নেতাদের বিরুদ্ধে বিসিবির আশীর্বাদপুষ্টতার অভিযোগ ছিল। আন্দোলনে থাকা তারকা ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধেও পাল্টা অভিযোগ উঠেছিল। তারকারা নাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কাছ থেকে নিজেদের পারিশ্রমিক বাড়িয়ে নেওয়ার জন্যই এটা করেছেন। এর পরই তারকা ক্রিকেটাররা নিজেদের সেই আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। সেই থেকে কোয়াবের নেতৃত্বেও তাঁদের আগ্রহ নেই।

গতকাল অবশ্য কোয়াব সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার জন্য তাঁরা আগামীতে জোর প্রচেষ্টা চালাবেন। একই সঙ্গে আজকের সাধারণ সভায় সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্তও আসতে পারে। সংগঠন স্বনির্ভর হলে কার্যক্রমে গতি আসবে বলেও বিশ্বাস সাধারণ সম্পাদকের। নারী ক্রিকেটারদের সংগঠনে যুক্ত করার বিষয়টিও আলোচ্যসূচিতে রয়েছে।