- বাংলাদেশ
- দেশের রেলবহরে যুক্ত হলো ভারতের ২০ ইঞ্জিন
দেশের রেলবহরে যুক্ত হলো ভারতের ২০ ইঞ্জিন

ভারত সরকারের উপহারের ২০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন। ছবি-সংগৃহীত
ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেওয়া ২০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। দুই দেশের রেলমন্ত্রী ইঞ্জিনগুলো প্রদান ও গ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার বিকেলে দর্শনা রেলস্টেশনে ইঞ্জিনগুলোর হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ইঞ্জিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভারতের রেলমন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ঐতিহাসিকভাবে ভারত ও বাংলাদেশে একই ধরণের রেলওয়ে ব্যবস্থা বিদ্যমান এবং তাই এই খাতে স্বাভাবিকভাবেই একে অপরের পরিপূরক। তিনি দুই রেলওয়ের মধ্যে সহযোগিতার অপার সম্ভাবনার ওপর জোর দেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, ভারতের কাছ থেকে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে এ লোকোমোটিভগুলো হস্তান্তর বাংলাদেশের জনগণের জন্য রেল ভ্রমণকে সহজ করে স্বাচ্ছন্দ্য এনে দেবে। বাংলাদেশকে এই লোকোমোটিভগুলো অনুদান প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সম্পদ ও দক্ষতা বিনিময়ের একটি চমৎকার উদাহরণ।
তিনি আরও বলেন, বহুমুখী সংযোগ বৃদ্ধিকরণ উভয় সরকারের জন্য অগ্রাধিকার ছিল। বিশেষ করে রেলওয়ে, উভয় দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি সমগ্র উপ-অঞ্চলকে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা রাখে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং কার্যকর ও পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়নের লক্ষ্যে রেলওয়ে যোগাযোগের আরও প্রবৃদ্ধিকরণ একটি মূল চালিকাশক্তি হিসেবে পারস্পরিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে।
শ্রী বৈষ্ণব বলেন, রেল সংযোগ হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারত্বের অন্যতম প্রধান উপাদান, যার মাঝে ভারতীয় ঋণের আওতায় ৩০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে রেল সেক্টরের প্রকল্পসমূহ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ১৬৯ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি মূল্যমানের প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।
ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর চলাকালীন ভারত সরকার অনুদান সহায়তায় আওতায় এ লোকোমোটিভগুলো হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি করে। লোকোমোটিভগুলো বাংলাদেশে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা ঢাকার রেল ভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন। অন্যদিকে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান দিল্লির রেল ভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মির্জা কামরুল হক জানান, ভারত সরকার উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ রেল ইঞ্জিন উপহার দিয়েছে। দুই দেশের মধ্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করতেই এই উদ্যোগ। ইঞ্জিন গুলো রেল ইয়ার্ডে রাখা আছে। পরে ইঞ্জিন গুলো রেলওয়ের ওয়ার্কসপে নেওয়া হবে।
চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ভারতের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর অশোক কুমার বিশ্বাস ও বাংলাদেশের পক্ষে ঈশ্বরদীর সিনিয়র সাব অ্যাসিস্টেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সারেক জামাল।
এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন, জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিম) অসিম কুমার তালুকদার, চিফ ম্যাকানিকেল ইঞ্জিনিয়ার মো. কুদরত ই খুদা, চিফ অপারেটিভ সুপারিনটেন্ট মো. আহছান উল্যা ভূঁইয়া, চিফ কমার্সশিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস, চিফ ইঞ্জিনিয়ার মো. আশাদুল হক, চিফ সিগন্যাল অ্যান্ড টেলিকমিনেকেশন ইঞ্জিনিয়ার মো. মিজানুর রহমান, মো. আশাবুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, তসলিম আহমেদ খান, শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজুসহ রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মন্তব্য করুন