- বাংলাদেশ
- ওয়াশ খাতের বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন
ওয়াশ খাতের বাজেট বরাদ্দে বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন

আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া উচিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ খাতে বরাদ্দ বাড়লেও নানা ধরনের বৈষম্য রয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে যেমন বৈষম্য আছে, তেমনি আন্তঃনগর বৈষম্যও আছে। বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সব ধরনের বৈষম্য দূর করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। ওয়াটারএইড, পিপিআরসি, ফানসা, এফএসএম নেটওয়ার্ক, স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অলসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পিপিআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থবছরের জন্য ওয়াশ খাতের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক বৈষম্য নিরসন এবং সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততাকে অগ্রাধিকার দেওয়া জরুরি। তিনি চর, হাওর, পাহাড়ি অঞ্চলসহ জলবায়ুগত ঝুঁকির আওতাধীন সুবিধাবঞ্চিত এলাকা এবং নগরগুলোর মধ্যকার বরাদ্দ বৈষম্য নিরসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, নিরাপদ পানি এবং স্যানিটেশন সংক্রান্ত জাতীয় ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বহুখাতভিত্তিক সমন্বয় নীতি অবলম্বনের মাধ্যমে মাঝারি শহর এবং নগরায়ণ প্রক্রিয়ার আওতাধীন গ্রামে পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য তহবিল বরাদ্দে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেরও অন্যতম পূর্বশর্ত।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ওয়াশ খাতে বাজেট বরাদ্দ বিষয়ে পিপিআরসির এক গবেষণায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছর ওয়াশ খাতে এডিপি বরাদ্দ আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। তবে এ বৃদ্ধির হার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৃদ্ধির হারের তুলনায় কম। এডিপির বরাদ্দ বাড়ার হার ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২ অনুসারে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ জনসংখ্যা উন্নত টয়লেট সুবিধার আওতাভুক্ত। অন্যদিকে এখনও উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করে শূন্য দশমিক ৬৯ ভাগ জনগোষ্ঠী।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা ওয়াশ বরাদ্দে আন্তঃনগর বৈষম্যের ফলে বিদ্যমান সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, নতুন অর্থবছরের এডিপি বরাদ্দে আরও যৌক্তিক এবং ন্যায়সংগত তহবিল বণ্টনের ব্যবস্থা করতে হবে। চারটি পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষের (ওয়াসা) জন্য এডিপি বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, এ খাতে বৈষম্য নিরসনে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
ওয়াটারএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, গত কয়েক বছরে বাজেটে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ বাড়লেও এখনও প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য। হাওর, পার্বত্য এলাকা, উপকূলীয় অঞ্চল ও চরে বসবাসকারী মানুষের জন্য ওয়াশ বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি সময়ের দাবি। ওয়াশ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের পাশাপাশি অর্থের যথাযথ ব্যবহার ও প্রকল্প বাস্তবায়নে কারিগরি দক্ষতার বিষয়টিতে আরও গুরুত্বারোপ জরুরি।
মন্তব্য করুন