ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, এক মাসে ভূমিকর আদায় হয়েছে ৩২৬ কোটি টাকা। অনলাইনে ভূমি কর আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়ায় এটা সম্ভব হয়েছে, যা আগে কখনোই চিন্তাও করা যেত না।

বুধবার গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ‘আয়োজিত সম্পদকর আহরণের সুযোগ’ শীর্ষক এক সংলাপে ভূমিমন্ত্রী এ তথ্য জানান। রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এ সংলাপ হয়। 

সিপিডির সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও জানান, ২০২০-২১ অর্থ বছরে ৬২১ কোটি টাকা কর আদায় হয়েছিল। ২০২১ অর্থ বছরে ম্যানুয়ালের পাশাপাশি অনলাইন ভিত্তিক কর আদায় ব্যবস্থা চালু করা হয়। সে বছর মোট কর আদায় হয়েছিল ৭৯৭ কোটি টাকা। ১৪ এপ্রিল থেকে ভূমিকর আদায় সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক করায় এ বছর দুই হাজার কোটি টাকার কর আদায় হতে পারে।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশের কর জিডিপি অনুপাত অত্যন্ত কম। রাজস্ব আয় বাড়াতে সরকার নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর অংশ হিসেবে ভূমিকর আদায় বাড়াতে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ভূমি আইনে সংশোধন আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সিপিডির সংলাপে আলোচনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন সংস্থাটির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। মূলপ্রবন্ধে তিনি বলেন, সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রম বেগবান করতে এবং বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের রাজস্ব আয় আরও বাড়াতে হবে। এজন্য ধনী ব্যক্তিদের ওপর যৌক্তিক হারে সম্পদ কর আরোপের প্রস্তাব করেন তিনি।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, জিডিপি আকারও বাড়ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ধনী-গরিবের আয় বৈষম্য। সম্পদকরের এই বৈষম্য কমাতে সহায়তা করবে। তবে সম্পদকর আরোপের ক্ষেত্রে যৌক্তিক কর হার নির্ধারণসহ ন্যায্যতা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি।

গবেষণা সংস্থা পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, গুলশান-বনানীর মত এলাকায় যারা পর্যাপ্ত কর দেন না, তাদের যুক্তি হলো- তাদের মূল্যবান জমি আছে, কিন্তু তা থেকে পর্যাপ্ত আয় নেই বা নগদ অর্থ নেই। এমনকি নিজে হয়তো ৩০০-৪০০ কোটি টাকা মূল্যের জমির ওপর এক বা দুই তলা বাড়ি করে নিজে বসবাস করছেন। তাদের ওপর সম্পদ কর আরোপ করতে হবে।

তবে এমন প্রস্তাবের বিপক্ষে মত দেন ভূমিমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাতারাতি সব পরিবর্তন সম্ভব নয়। সবার কথা মাথায় রেখে আইনি সংস্কার করতে হয়। কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত তার সম্পদ বিক্রি করে ক্যাপিটাল গেইন না করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত ওই সম্পদের ওপর বাজারমূল্যের সম্পদ কর আরোপ করা ন্যায্য হবে না।