বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়ম করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে যুক্তরাষ্ট্র যে ঘোষণা দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। 

বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে বিবৃতিতে জানায়, দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রাখতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানায়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল উল্লেখ করে এতে বলা হয়, জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে এই সরকারের ধারাবাহিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। 

২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, এ সময় দারিদ্র্যতা কমেছে। ২০০৬ সালে চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১.৫ শতাংশ, সেখান থেকে কমে ২০২২ সালে ১৮.৭ শতাংশে নেমেছে। এ সময় চরম দারিদ্র্য ২৫.১ শতাংশ থেকে কমে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে। গত চৌদ্দ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার টানা তিন মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার কারণেই এই অর্জন। 

বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটাধিকারের বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন উল্লেখ করে বলা হয়, ভোট কারচুপির মাধ্যমে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে কোনো সরকার ক্ষমতায় থাকার নজির নেই। জনগণের ভোটাধিকারকে আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রীয় পবিত্রতা বলে মনে করে। 

এই অধিকারের জন্য সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ ও বৈধ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য সংগঠন ও সভাসমাবেশের স্বাধীনতাকে সরকার গুরুত্ব দেয়। 

বিএনপি সরকারের আমলে এক কোটির বেশি জাল ভোটার কার্ড করা হয়েছিল উল্লেখ করে বলা হয়, ভোটারদের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও এজেন্টদের মধ্যে আস্থার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবহার চালু করা হয়েছে।

নির্বাচনে অনিয়ম মোকাবিলার সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনী প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের কঠোর নজরদারির মধ্যে থাকবে। যেসব অগণতান্ত্রিক শক্তি সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তারা সতর্ক থাকবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকবে বলে সরকার আশা করছে। 

এতে আরও বলা হয়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও দেশে উন্নয়নের ধারা চলমান রাখা সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশের জনগণের ওপর নির্ভর করে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর যে অঙ্গীকার তার পাশে দাঁড়ানোয় যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়য়ের প্রশংসা করে বাংলাদেশ সরকার।