সন্ধ্যা নদী দখলমুক্ত করে প্রতিবেদন না দেওয়ায় বরিশালের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) প্রতি উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, দেশ এটাই, এখানেই থাকতে হবে। লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেবে। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন। 

বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশে এই মন্তব্য করেন। পরে ১৮ জুনের মধ্যে ওই নদী দখলমুক্ত করার বিষয়ে বরিশালের ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিয়া আক্তার।

সন্ধ্যা নদী দখলের বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ভিত্তিতে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে সন্ধ্যা নদী দখলমুক্ত করতে বলা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি বিষয়টি রিটকারী হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষ থেকে হাইকোর্টের নজরে আনা হয়।

রোববার এ বিষয়ে শুনানিতে হাইকোর্ট প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলেন। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘প্রতিবেদনের জন্য আমাদের সময় দিন, যোগাযোগ করি।’ রিটকারী আইনজীবী বলেন, ‘আদেশ নিয়ে ডিসি এক ধরনের খেলা করে।’ আদালত বলেন, ‘যা দেখবে তাই তো শিখবে; সচিব যা করে। আদালত অবমাননার হাজার হাজার মামলা পড়ে আছে।’ তখন মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আমরা তাহলে কোথায় যাব? আদালত বলেন, ‘আপনারা কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) কোর্টে যান।’ এ সময় মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘আদালতের অস্বিত্ব রাখতে হলে সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা (আদালত অবমাননা সংক্রান্ত) সেটা চর্চা করতে হবে। সেটা না করলে আইনের শাসন থাকবে না। জনগণও কোনো বিচার পাবে না। রাষ্ট্র কলাপস করলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ রাষ্ট্রপক্ষ এ সময় শেষবারের মতো সময় চান। তখন আদালত বলেন, ‘আপনি যদি একশ বছরও সময় নেন লাভ হবে না।’

পরে মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভেতরে গুচ্ছ গ্রাম দখল করা হচ্ছিল মাটি ভরাট করে। বিষয়টি আমরা চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। হাইকোর্ট ২০১৮ সালে এক রায়ে অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। তারা প্রতিবেদন না দেওয়ায় ৫ বছর পর আদালতে আবেদন করেছিলাম। আজ প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষ সময় চেয়েছে।