পাহাড়ে সম্প্রতি গজিয়ে ওঠা বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের ১১টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি এ কাজে বম জনগোষ্ঠীর নেতাদের ভূমিকা রাখতেও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে সোমবার অরুণ সারকী টাউন হলে ১১টি জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা এ আহ্বান জানান। সভায় বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মূল সংগঠন ছাড়াও ছাত্র ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা যোগ দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। 

বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ পাহাড়ে যে হত্যাকাণ্ড ঘটনাচ্ছে, তা খুবই দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তাঁরা বলেন, কেএনএফ সাধারণ মানুষ হত্যা, রাষ্ট্রীয় বাহিনী সেনাবাহিনী সদস্যদের হত্যা ও আহত করে তাদের লক্ষ্য ও স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে না। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে স্বাধীনভাবে বসবাসের অধিকার সব জনগোষ্ঠীর রয়েছে। অথচ কেএনএফ বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি তিন জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য করার দাবি জানিয়েছে। সেখানে মারমা, চাকমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, বম, ম্রো, খিয়াং, খুমি ছাড়া আর কোনো জনগোষ্ঠী বসবাস করতে পারবে না। তাদের এই দাবি অবাস্তব ও অন্যায্য। তাদের দাবি কোনোদিন পূরণ হবে না; বরং কেএনএফ তাদের দাবি পূরণ করতে গিয়ে ত্রিপুরা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা ও ম্রো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে। 

কেএনএফের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে পাহাড়ে জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত ঘটার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন বক্তারা। বক্তারা বলেন, কেএনএফ ইতোমধ্যে কয়েকটি হত্যা, সংঘাত ও বৌদ্ধ বিহারে ঢুকে তল্লাশি চালানোর নামে ভাঙচুরের ঘটনা জাতিগত এবং ধর্মীয় বিদ্বেষকে উস্কে দিয়েছে। 

বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার বম বলেন, ‘গত রোববারও কেএনএফের প্রধান নাথান বমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ হয়েছে তাঁর। তিনি নাথানকে বারবার অনুরোধ করেছেন সশস্ত্র পথ পরিহার করে শান্তির পথে আসার। কিন্তু নাথান এ বিষয়ে কিছু বলেনি। সে বলেছে কিছু অধিকারের কথা।’ তবে নাথান বম ঠিক কী অধিকারের কথা বলেছেন তা লালজার বম স্পষ্ট করেননি।