বাংলাদেশ একাদশে টেস্ট ক্রিকেটারের ছড়াছড়ি। টেস্ট খেলেছেন সাতজনই। পেসার শরিফুল ইসলামকে বাদ দিলে বাকি ছয়জন ব্যাটার। মাহমুদুল হাসান জয়, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, সাইফ হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, নুরুল হাসান সোহান জাতীয় দলের মুখ। সেদিক থেকে বলতে গেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে শেষ চার দিনের ম্যাচে জাতীয় দলই খেলাচ্ছে বিসিবি।

শক্তিশালী এই দল নিয়েও সফরকারীদের সঙ্গে লড়াই করতে পারছে না স্বাগতিকরা। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং– তিন বিভাগেই ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের কেন এই হাল? জাতীয় দল নির্বাচক থেকে শুরু করে কোচিং স্টাফের কাছে ঢালাও ব্যর্থতার কারণ জানতে চাওয়া হলে সঠিক উত্তর খুঁজে পেলেন না কেউই। এ দলের প্রধান কোচ জেমি সিডন্স ছাড়া মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকলেন সবাই।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের উইকেট পুরোপুরি ব্যাটিংবান্ধব। যেখানে উইন্ডিজ ‘এ’ দল প্রথম ইনিংসে করেছে ৪৪৫ রান। পাঁচটি হাফ সেঞ্চুরির দুটি আবার ৮০ ছোঁয়া। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ভালো বোলিং করায় এই রানে বেঁধে ফেলা গেছে। ৩৮.২ ওভার বল করে ১৩৩ রানে পাঁচ উইকেট শিকার তাঁর। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ইনিংসে এটি অষ্টম পাঁচ উইকেট বাঁহাতি এ স্পিনারের।

উইন্ডিজ প্রথম দিন শেষ করেছিল ছয় উইকেটে ৩২০ রানে। গতকাল আরও ১২৫ রান যোগ করে বাকি চার উইকেট হারায়। জবাব দিতে নেমে খাবি খেতে থাকেন স্বাগতিক ব্যাটাররা। একজন ব্যাটারও লড়াই করার মতো দৃঢ়তা দেখাতে পারেননি। ড্রেসিংরুমে ফেরার মিছিলটাও তাই লম্বা হতে সময় লাগেনি। বাংলাদেশ ৩৮.১ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত। জয়কে দিয়ে শুরু, সোহানে দিনের শেষ। তানজিম হাসান সাকিব আর নাসুম আহমেদ এখন অপরাজিত জুটি। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৭ ওভার ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রান।

প্রধান কোচ জেমি সিডন্সের কাছে এত খারাপ ব্যাটিং করার কারণ জানতে চাওয়া হলে তাঁর এক বাক্যের উত্তর ছিল, ‘আজ যে আমাদের খারাপ দিন গেছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজের কোন দিনটি ভালো গেছে বাংলাদেশের জেমি চট করে বলতে পারবেন না। তবে প্রতিটি খারাপ দিনের মধ্যে গতকাল ছিল বেশি খারাপ।

তাই জেমিকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়েছিল– দলের সিংহভাগ খেলোয়াড় যেখানে টেস্ট ক্রিকেটার, সেই দলের এক বা দু’জন ব্যাটারের ইনিংস লম্বা করা উচিত ছিল কিনা, বিশেষ করে নিজেদের মাঠে? হোয়াটসঅ্যাপে করা প্রশ্ন পড়ে জেমি যে উত্তর দিলেন তার সারমর্ম হলো– ক্রিকেটে এসব হয়েই থাকে। ‘সবকিছু সব সময় পরিকল্পনা মতো হয় না। এটাই টেস্ট ক্রিকেট। সহজ হলে আমরা সবাই টেস্ট ক্রিকেট খেলতাম।’ প্রশ্ন হচ্ছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য যা সহজ, বাংলাদেশের জন্য তা কঠিন কেন, তাও নিজেদের মাটিতে?

/এমএইচ/