- বাংলাদেশ
- সুলতানপুরের অধরা
সুলতানপুরের অধরা

“বেশিদিন আগের কথা নয়, ‘সুলতানপুর’ সিনেমার শুটিংয়ে রোদে পা পুড়ে গিয়েছিল। সাভারের শুটিং সেট থেকে ফোসকা পড়া পায়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করেছিলাম। লাল হয়ে যাওয়া ওই ছবি দেখে অনেকেই সমবেদনা জানাচ্ছিলেন। কেউ কেউ আবার রসিকতা করে মন্তব্য করেছেন, ‘ছিঃ, সিনেমার নায়িকার পা কি এ রকম হতে পারে!’ ওই সময় করোনার প্রাদুর্ভাব ছিল বেশি। প্রচণ্ড গরমে পা নিয়ে টানা ছয় দিন অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। যে সিনেমাটির জন্য এত কষ্ট, তা অবশেষে মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল।’’ ‘সুলতানপুর’ মুক্তির প্রাক্কালে সিনেমা নিয়ে এভাবেই বললেন অভিনেত্রী অধরা খান।
সীমান্তের রোমাঞ্চকর গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। এটি তাঁর মুক্তি পেতে যাওয়া চতুর্থ সিনেমা। সৈকত নাসির পরিচালিত এ সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন সাঞ্জু জন ও সুমন ফারুক। এর আগে অধরা অভিনীত সিনেমা ‘নায়ক’, ‘মাতাল’ ও ‘পাগলের মতো ভালোবাসি’ মুক্তি পায়। আলাপের শুরুতেই ‘সুলতানপুর’ নিয়ে আশাবাদের কথা জানালেন তিনি। অধরার ভাষ্য, “সিনেমার গল্প অসাধারণ। পলিটিক্যাল অ্যাকশনধর্মী সিনেমা। দর্শক যেমন গল্পের সিনেমা পর্দায় দেখতে চান, এটি তেমনই। গতানুগতিক গল্পের বাইরে সিনেমাটিতে অভিনয় করেছি গ্রামের সহজ-সরল সাধারণ মেয়ে ‘সামিয়া’ চরিত্রে। মেয়েটি তার সৎ বাবার আদর্শে বড় হয়েছে। বাবার পথে থেকে দেশ ও মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে। ছোট পরিসরে হলেও চেষ্টা থাকে বাবার মতো মানুষের পাশে থাকার। গল্প ও চরিত্র মিলে সিনেমাটি দর্শকের মনোযোগ কাড়বে– এ আশা করাই যায়।”
সহশিল্পীদের কাজের প্রশংসা করে অধরা বলেন, ‘দলগতভাবেই কাজটি ভালো হয়েছে। এই সিনেমায় সাঞ্জুকে তাঁর পুরোনো কাজের সঙ্গে মেলাতে পারবেন না। এই সিনেমা দিয়ে সুমন ফারুকের অভিষেক হচ্ছে– তা ট্রেলার, গান দেখেও কেউ বুঝতে পারেনি। খলনায়ক আশীষ খন্দকারের অভিনয় নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। যে যার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ দিয়েছেন।’
সব সময় গল্প ও চরিত্র দেখে কাজ করেন অধরা। এ কারণে সমসাময়িকদের তুলনায় তাঁর হাতে সিনেমার সংখ্যা একেবারেই কম। বর্তমানে অপূর্ব রানা পরিচালিত ‘দ্য রাইটার’ সিনেমায় কাজ করছেন। এই সিনেমায় তাঁর বিপরীতে আছেন আদর আজাদ। একজন লেখকের জীবনযাপন নিয়ে সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে। আর ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের ‘দখিনা দুয়ার’ সিনেমায় তাঁকে দেখা যাবে গ্রামের মেয়ের চরিত্রে। সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন রকি খান। এ দুটি সিনেমা নিয়েও আশাবাদের কথা জানালেন এ অভিনেত্রী।
কাজ নিয়ে তো অনেক কথা হলো, প্রেম-বিয়ে নিয়ে অধরার ভাবনা কী– প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘সব সময় তো প্রেমেই ডুবে থাকি [হাসি]। একজন শিল্পীর মধ্যে যদি প্রেমই না থাকে তাহলে সে কীভাবে কাজ করবে! এ কারণে কোনো প্রেম যদি ভেঙে যায় আবারও প্রেমে পড়ি। বলতে পারেন, বারবার প্রেমে পড়ি। তবে বিয়ে নিয়ে এখনই ভাবছি না। আগে ক্যারিয়ার এরপর বিয়ে।’ অভিনয় জীবনের বাইরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনযাপন অন্যদের চেয়ে একটু আলাদা। একটু ফুরসত পেলেই দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করেন। সেসব আনন্দময় মুহূর্তের ছবি বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করতে ভোলেন না অধরা। গল্প, উপন্যাস, কবিতা ও গানের প্রতিও আছে তাঁর আলাদা আগ্রহ।
ছোটবেলায় অধরা ছিলেন ডানপিটে স্বভাবের। হই-হুল্লোড় আর খেলাধুলা নিয়েই রাতদিন পার করে দিতেন। চলচ্চিত্র তো দূরের কথা, নাটক-টেলিছবিতে অভিনয় কিংবা মডেলিংয়ের বাসনাও তাঁর মনে জাগেনি। সেই মেয়েটি এখন পুরোদস্তুর অভিনেত্রী। বাড়ছে ভালো কাজের সংখ্যা। তৈরি হচ্ছে নিজেকে অভিনেত্রী হিসেবে পরিণত করার সুযোগ। মনেপ্রাণে তিনি হতে চান পরিপূর্ণ একজন শিল্পী। সেই লক্ষ্যেই হাঁটছেন এই অভিনেত্রী।
মন্তব্য করুন