- বাংলাদেশ
- সংকটে পড়তে পারে পোশাক রপ্তানি
সংকটে পড়তে পারে পোশাক রপ্তানি

প্রস্তাবিত বাজেটে উৎসে কর নিয়ে কোনো কথা বলেননি অর্থমন্ত্রী। তার মানে, আইনে নির্ধারিত উৎসে কর এক শতাংশই বহাল রয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশে ১৯৮৪ এর সপ্তম অধ্যায়ের ৫৩ বিবি ধারায় বলা হয়, যে ব্যাংকের মাধ্যমে একজন রপ্তানিকারকের পণ্যের রপ্তানি আয় গৃহীত হয়, তা ক্রেডিট করার সময় মোট রপ্তানি আয়ের ১ শতাংশ হারে কর কর্তন করবে। অর্থাৎ ১০০ টাকার পণ্য রপ্তানি করলে কর হিসাবে এক টাকা কেটে রাখা হবে।
বিগত বছরগুলোতে বিভিন্ন বৈরী পরিস্থিতিতে এক বছর মেয়াদের জন্য কখনও ২৫ পয়সা, কখনও ৫০ পয়সা হিসেবে উৎসে কর কর্তনের সুবিধা প্রস্তাব করতেন অর্থমন্ত্রী। পরে এসআরও জারির মাধ্যমে তা কার্যকর করা হতো। এ বছর উৎসে কর নিয়ে কোনো প্রস্তাব না থাকার অর্থ, আইন অনুযায়ী বিদ্যমান ১ শতাংশ উৎসে কর বহাল থাকা।
অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় বলেছেন, রপ্তানিমুখী শিল্প বহুমুখীকরণ এবং পশ্চাৎসংযোগ শিল্পের প্রণোদনা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। অনিবার্য কারণ ছাড়া কর অব্যাহতির এসআরও জারি পরিহার করা হবে। ফলে এসআরও জারির মাধ্যমে উৎসে কর হ্রাসের সম্ভাবনা কম। অবশ্য রপ্তানি আয় বাড়ানোর উপযোগী কার্যক্রম বাস্তবায়নের ধারা অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন তিনি। এলডিসি থেকে টেকসই উত্তরণের স্বার্থে শুল্ক কাঠামো সংস্কার করা হবে। ধীরে ধীরে নগদ সহায়তা হ্রাসের কথাও ভাবছে সরকার। পাশাপাশি রপ্তানি খাতের উন্নতি যাতে ব্যাহত না হয় তা নিশ্চিত করতে নগদ সহায়তার বিকল্প অনুসন্ধানেরও চেষ্টা চলছে। যুদ্ধাবস্থার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছর কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
এ বিষয়ে তৈরি পোশাক উৎপাদক এবং রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সমকালকে বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় উৎসে কর কমানোর দাবি বিবেচনায় না নেওয়া পোশাক রপ্তানি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। উৎপাদন খরচ আরও বেড়ে যাবে। নতুন বিনিয়োগ আসবে না, কর্মসংস্থান কমবে। শ্রমিক ছাঁটাই করতে হবে হয়তো। কারণ, রপ্তানির আদেশ না থাকলে শ্রমিকদের বেতনের জোগান আসবে কোথা থেকে? অথচ টেকসই শিল্প এবং জাতীয় উন্নয়নের জন্য এখন শ্রমিকদের দক্ষ এবং অভিজ্ঞ করে তোলার প্রয়োজন ছিল।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, বাজেটে রপ্তানি-সংক্রান্ত নানা কথা বলা আছে; কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ দেখেননি তিনি। গত কয়েক মাসের ধারাবাহিকতায় আগামীতেও রপ্তানিতে নেতিবাচক পরিস্থিতি অব্যাহত থেকে যাবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। আজ শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাবে বিজিএমইএ।
মন্তব্য করুন