জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আবাসিক হল থেকে গণরুম বিলুপ্ত করাসহ তিনদফা দাবিতে অবস্থানরত সামিউল ইসলাম প্রত্যয়ের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের খবরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আছেন বলেও শিক্ষার্থীদের জানানো হয়। তবে উপাচার্যের সঙ্গে কথা না বলে কর্মসূচি শেষ করবেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও হলে শিক্ষার্থীদের আসন দিতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রশাসন। ফলে গণরুম ও গেস্টরুমে শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন। নতুন হল খোলার বিষয়ে আল্টিমেটামের দুই মাস পার হলেও প্রশাসন এখনও হলগুলো চালু করতে পারেনি। এছাড়া হলগুলোতে আসন সংকট রয়েছে, তবুও অছাত্রদের হল থেকে বের করতে পারছে না প্রশাসন।

এ সময় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশফার রহমান নবীনের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অর্ণব সিদ্দিক এবং জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এদিকে আবাসিক হল থেকে গণরুম বিলুপ্ত করাসহ তিনদফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের খেলার মাঠে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তিনি।

শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচির খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে সেখান যান। তারা শিক্ষার্থীর দাবিগুলো মেনে নেওয়ার আশ্বাসও দেন। তবে হল থেকে অছাত্রদের বের করার দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে জানান সামিউল।

সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, শুক্রবার উপাচার্য এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, আমাকে একটা আসন দেবেন, প্রয়োজনে সিঙ্গেল রুম দেবেন। কিন্তু দাবিগুলো তো আমার নিজের জন্য নয়। এছাড়া প্রশাসন থেকে আমার জন্য স্যালাইন আনা হয়েছিল। দাবিগুলো পুরোপুরি মানা হলেই এখান থেকে উঠব।