জীবন কতটা অনিশ্চিত হতে পারে, তা ক্যান্সার রোগীরা বুঝতে পারেন। ক্যান্সার প্রতিরোধ ও চিকিৎসা দুটিই সম্ভব। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্বের বিষয় আছে। ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়ে রাষ্ট্রের উদ্যোগ বাড়ানো উচিত। 

শনিবার ক্যান্সার সার্ভাইবার দিবস উপলক্ষে বাংলা একাডেমির মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ক্যান্সার কেয়ার কমিউনিটি, বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠা ১০ জনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। তাঁরা হলেন– উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষক ড. রুবিনা হক, আইনজীবী ও ক্যান্সার সংগঠক দেবাহুতি চক্রবর্তী, গৃহিণী ও ক্যান্সার সংগঠক তাহমিনা গাফফার, চিকিৎসক মো. সালেহ উদ্দিন মাহমুদ তুষার, ব্যবসায়ী খুজিস্তা নূর ই নাহারিন মুন্নি, অনুবাদক ও লেখক অদিতি ফাল্গুনী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও শিক্ষক রফিকুল আনোয়ার রাসেল, শিক্ষক ড. জেসমিন পারভিন সীমা, সরকারি চাকরিজীবী ও ক্যান্সার সংগঠক নূর-এ-শাফী আহনাফ এবং ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান অ্যান্ড নিউট্রিশনিস্ট আনিকা তাহিসীন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি  ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একসময় এই রোগে মৃত্যু অবধারিত ভাবা হতো। সেটা এখন কমেছে। তবে এখনও ব্যয়বহুল রয়ে গেছে। ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যেমন রোগীর যত্ন দরকার, ঠিক তেমনই সবার সহযোগিতা দরকার। কেবল পরিবার নয়, পুরো সমাজ যেন এ বিষয়টি জানে, সেদিকটি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘৩২ বছর আগে আমার স্ত্রী এই রোগে মৃত্যুবরণ করছেন। তবে এর চিকিৎসা এতদিনে অনেক উন্নত হয়েছে। আমার স্ত্রী ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার পরদিনই পিজি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু চার সপ্তাহ পর অপারেশনের সিরিয়াল পেয়েছিলাম।’

দেশে ক্যান্সার চিকিৎসার পথিকৃৎ অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ক্যান্সার হলো শ দুয়েক রোগের সমাহার। সবগুলোকে মিলিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে ক্যান্সার। আমরা অদ্ভুত এক অন্ধকার জায়গায় বসবাস করি। আমার মতো অধ্যাপকরাও এখনও অসত্য-অশ্লীল বাক্য উচ্চারণ করি– ‘আর কিছু করার নেই, বাড়ি নিয়ে যান।’ এটি বলার কোনো নৈতিক, ধর্মীয় ও আইনগত কোনো অধিকার নেই।

ক্যান্সার কেয়ার কমিউনিটি বাংলাদেশের উপদেষ্টা অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসিকিন বলেন, আমরা এখনও মানুষ আক্রান্ত হবে, চিকিৎসা নিতে আসবে– এই পর্যায়ে আছি। কিন্তু পৃথিবী অনেকদূর চলে গেছে। শুধু আক্রান্ত হলেই চিকিৎসা দেওয়া হবে– এভাবে চলে না। সবার আগে ক্যান্সার প্রতিরোধে কর্মপরিকল্পনা দরকার।