- বাংলাদেশ
- বাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা দুধ মানসম্পন্ন নয়
সংসদীয় কমিটির অভিযোগ
বাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা দুধ মানসম্পন্ন নয়

জাতীয় সংসদ ভবন (ফাইল ফটো)
বাজারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা দুধ মানসম্পন্ন নয় বলে অভিযোগ তুলেছে সংসদীয় কমিটি। সদস্যদের এই অভিযোগের সঙ্গে সুর মিলিয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যও বলেছেন, মিল্ক ভিটার দুধ শতভাগ খাঁটি হলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা দুধ নিম্নমানের। যে কারণে তারা কম দামে এগুলো বাজারজাত করতে পারছে।
রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই অভিযোগ করা হয়। কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, রাজী মোহাম্মদ ফখরুল, শাহে আলম ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে নিম্নমানের দুধ কিনে তাতে ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে মিল্কভিটার তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করে। বৈঠকে নিম্নমানের দুধ সরবরাহের বিষয়টি সাধারণ জনগণকে জানাতে হবে বলেও মত প্রকাশ করা হয়। কমিটির আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা পর রোববারের বৈঠকে তা কার্যবিবরণী আকারে অনুমোদন পায়।
জানা গেছে, আগের বৈঠকে কমিটির সদস্য সরকারি দলের এমপি শাহে আলম বলেন, বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে কমমূল্যে নিম্নমানের দুধ কেনে। নিম্নমানের গুঁড়ো দুধ ৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করে তা মিশিয়ে বাজারে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করে থাকে।
বৈঠকে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য জানান, মিল্ক ভিটার পণ্য শতভাগ খাঁটি। এখানে ভেজালের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দেশি-বিদেশি নিম্নমানের দুধ কম দামে কিনে তুলনামূলক কমদামে বিক্রি করছে। বিষয়টির সুষ্ঠু মান নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ থেকে ৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে তারা নিম্নমানের দুধ কিনছে। প্রতিমন্ত্রী আমদানি করা দুধের ওপর ১০-১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের দুধ কম দামে কিনে কন্ট্রামিনেশন (ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে) করে বাজারে বিক্রি করছে, এটা জনসাধারণকে জানানো দরকার।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব বলেন, মিল্কভিটার বর্তমানে ৪ লাখ লিটার দুধ প্রসেস করার ক্যাপাসিটি রয়েছে। মিল্ক ভিটা গড়ে ৫০ টাকা কেজি দরে দুধ সংগ্রহ করে কিন্তু খামারিরা খোলা বাজারে দুধ বিক্রি করে এর চেয়ে বেশি পায়। এ কারণে মিল্কভিটার দুধ পেতে সমস্যা হচ্ছে। আবার ৫০ টাকার বেশি দামে দুধ কেনা হলে ভোক্তা পর্যায়ে ১০০ টাকা লিটার মূল্যেও পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকেও মিল্কভিটা নিয়ে আলোচনায় খামারি পর্যায়ে দুধের দাম বাড়ানোর জন্য ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করেন মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে বলেন, সরকার এখন সব খাত থেকে ভর্তুকি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই সময়ে নতুন করে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন