ফরিদপুরে বহুমুখী পাটজাত পণ্য তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়া হবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। তিনি বলেন, ‘পাটজাত পণ্য তৈরিতে দক্ষ উদ্যোক্তা গড়তে ফরিদপুর থেকেই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এ এলাকায় একটি ভালো জায়গা নির্ধারণ করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়া হবে।’

ফরিদপুর শহরের অম্বিকা মেমোরিয়াল হলে বহুমুখী পাট ও পাটজাত পণ্য মেলা-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

‘পাট শিল্পের অবদান, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ’ প্রতিপাদ্যে পাট অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের সভাপতিত্বে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ‘ফরিদপুরে পাট চাষিদের পাট জাগ দেওয়ার কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা আপনাদের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে কিছু অর্থ বরাদ্দ দিব যাতে পাট জাগ দেওয়ার সময় প্রয়োজনে খনন করে এবং সেচের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করে একত্রে অনেক চাষি তাদের পাট জাগ দিতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ব দরবারে ভারত পাটজাত ডায়ভারসি ও ফিনিস পণ্যে আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। আমরা পিছিয়ে থাকব কেন? পাট আমাদের গর্ব। সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে, তবুও আমরা পেছনে। আমরা পাটের ফিনিস পণ্যকে নিয়ে বিশ্ব দরবারে এগোতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাটকে ২০২৩ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন। সেই সঙ্গে পাটকে কৃষিপণ্য করায় আমরা কৃষককে আরও সহায়তা করতে পারব।’

মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে চার কোটি পরিবার পাট চাষের সঙ্গে জড়িত। তারা বাজারমূল্য না পেলে পাট চাষ থেকে সরে আসবে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের লাভ দিতে হবে। পাটের আইন ঠিকমত মানতে হবে। দেশের খানা-খন্দগুলো বিভিন্ন দপ্তর মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়ে রেখেছে। ভবিষ্যতে পাট জাগ দেওয়ার জায়গা রেখে লিজ দিন।’

তিনি বলেন, ‘পাটকে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুও পাটকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি ৬ দফা আন্দোলনেও পাটের কথা বলেছেন। কারণ, তখন পাকিস্তান সরকার চলতো এই পাটের টাকায়।’ 

তিনি বলেন, ‘ডলার সংকটে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অচিরেই তা সমাধান করা হবে। আমাদের অর্থের কোনো সংকট নেই। বাকিতে তারা আমাদের কয়লা দিয়েছিল, ডলারের সংকটের কারণে তা পরিশোধ করতে গিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সকল আমদানিতে ডলার প্রয়োজন। বিদেশি ফলসহ এমন কিছু পণ্য আমদানি করা হয়, যার প্রয়োজন কম। অপ্রয়োজনীয় ডলার ব্যয় হয় আমাদের।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনু বিভাগ) মো. মাহমুদ হোসেন, পাট অধিদপ্তরের (অতিরিক্ত সচিব) মহাপরিচালক ড. সেলিনা আক্তার, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা। আরও উপস্থিত ছিলেন পাট অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সংগঠনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

শহরের অম্বিকা মোমোরিয়াল হলে পাটজাত পণ্য নিয়ে ২২ স্টল তাদের পসরা সাজিয়েছেন। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এ সময় সকল স্টল ঘুরে দেখেন। পরে তিনি শহরের গোবিন্দপুরে পল্লী কবি জসীম উদ্দিনের বাসভবন পরিদর্শন করেন। 

/এইচকে/