- বাংলাদেশ
- নিখোঁজের চারদিন পর মিলল কিশোরের বস্তাবন্দি মরদেহ
নিখোঁজের চারদিন পর মিলল কিশোরের বস্তাবন্দি মরদেহ

ছবি প্রতীকী
দিনমজুর বাবাকে রাত ৮টার দিকে রাজধানীর জুরাইনে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে যায় অটোরিকশাচালক মো. ইমন (১৭)। এর পর নিখোঁজ হয় সে। নিখোঁজের চারদিন পর শনিবার রাতে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার হাত-পা বাঁধা ছিল। পুলিশের ধারণা, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
স্বজনরা জানিয়েছেন, ইমনের বাবা মো. লিটন দিনমজুর। কদমতলী এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশাও চালান মাঝেমধ্যে। জুরাইনে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে ইমন দ্বিতীয়। সংসারের অভাব ঘোচাতে ছেলে ইমনকে অটোরিকশা চালাতে দিয়েছিলেন তিনি। ৩০ মে রাত ৮টার দিকে ইমন তার বাবাকে নামিয়ে রিকশা নিয়ে বের হয়। লিটন রাত ৯টার দিকে ইমনকে কল করলে তার ফোন বন্ধ পান। ভেবেছিলেন চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় ফোন বন্ধ হতে পারে। তবে রাত যত বাড়তে থাকে ততই দুশ্চিন্তায় পড়ে পরিবার। রাত দেড়টার দিকে অটোরিকশাটি গেন্ডারিয়ার ফরাশগঞ্জ এলাকায় পড়ে থাকার তথ্য জানিয়ে পুলিশ অটোরিকশার মালিক আশিক সরকারকে ফোন করে। আশিকের সঙ্গে লিটনের পরিবারের ঘনিষ্ঠতা আছে। রাতেই লিটনকে নিয়ে আশিক ফরাশগঞ্জে যান।
আশিক সমকালকে বলেন, এক বছর ধরে ইমন তাঁর রিকশা ভাড়ায় চালায়। ঘটনার দিন সকালে রিকশা নিয়ে বের হয়ে দুপুরে ফিরে আসে। রিকশার ব্যাটারি চার্জে দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে অন্য একটি রিকশা নিয়ে বের হয়েছিল। রাতে পুলিশ ফোন দিয়ে জানানোর পর রিকশা উদ্ধার করা হয়। তখন ইমনকে পাওয়া যায়নি। রিকশার ব্যাটারি খোয়া গেছে।
রিকশা উদ্ধারের পর লিটন কদমতলী থানায় গিয়ে ইমনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানান। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে কদমতলী থানাধীন পশ্চিম মোহাম্মদবাড়ির মসজিদের পাশে ফাঁকা জমিতে ঘাসের মধ্যে বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে পান এলাকাবাসী। দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন। এর পর জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এর পর ইমনের বাবা মরদেহ শনাক্ত করেন। রোববার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। বিকেলে স্বজনরা মরদেহ নিয়ে বরিশালের হিজলায় ঘসেরচরে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন।
কদমতলী থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা সমকালকে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। রিকশা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে খুন করা হলে রিকশাটি পাওয়া যেত না। লিটন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
লিটন সমকালকে বলেন, তার জানামতে ইমনের কোনো শত্রু নেই। তার ছেলে কারও সঙ্গে কোনো ঝামেলায় জড়ায়নি। কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না তিনি।
মন্তব্য করুন