রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর ভরাটের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে পুকুরটি বর্তমানে যে অবস্থায় আছে সেভাবেই থাকবে।

বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরী সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার রুল জারিসহ এই আদেশ দেন। রুলে পুকুরের দখল হওয়া জায়গা উদ্ধারে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং দখলকারীদের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ সচিব, রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ১১ জনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও হাইকোর্টের স্থিতাবস্থার আদেশ কার্যকর করে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

গত ৪ জুন পুরান ঢাকার শ্যামপুরের গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের পুকুর দখলমুক্ত করে তা সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়। পাশাপাশি রিটে পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর অফিস নির্মাণে নিষেধাজ্ঞাসহ দখলের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী ও রিপন বাড়ৈর পক্ষে এ রিটটি দায়ের করেন। 

আদেশের পর মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, হাইকোর্ট গেন্ডারিয়ার শতবর্ষী পুকুর ভরাটে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। এর ফলে এখন যে অবস্থায় পুকুরটি আছে সেভাবেই থাকবে।

গত ২১ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পুকুর দখল করে মার্কেট ও কাউন্সিলর কার্যালয়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ৪ জুন ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করে বেসরকারি সংগঠন এইচআরপিবি।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সময় যে পুকুরে গোসল, ধোয়ামোছা চলতো, এখন সেই পুকুর মৃতপ্রায়। চারপাশে ভবনের পর ভবন। পুকুরের ভেতরে এমনভাবে দোকান ও মার্কেট করা হয়েছে যে দোকানের পেছনে যে পুকুর রয়েছে সেটি সড়ক থেকে বোঝাই যাচ্ছে না। দিনের বেলা মার্কেট নির্মাণের কাজ বন্ধ থাকলেও এখনো রাতের বেলা দোকান তুলে পুকুর দখলের অভিযোগ উঠেছে। রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ডিআইটির শতবর্ষের এ পুকুরটি দখলের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) বলছে, যারা দখল করছে তারা মামলার পর মামলা করায় আমরা পেরে উঠছি না। জনস্বার্থে পুকুরটি রক্ষায় সবারই এগিয়ে আসা উচিত।

রাজউক ১৯৬৩ সালে গেন্ডারিয়ায় ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল। পুকুরটির বয়স বর্তমানে প্রায় ১০০ বছর। সেই পুকুরটিই ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে এখন ভরাট করার প্রতিযোগিতা চলছে।