- বাংলাদেশ
- হজ টিমে বড় পরিবর্তন
হজ টিমে বড় পরিবর্তন
অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ ছিল দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

ফাইল ছবি
অবশেষে হজকেন্দ্রিক অব্যবস্থাপনা দূর করার ব্যবস্থা নিল সরকার। গত বছর হজকেন্দ্রিক ব্যাপক অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দু’জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এবারও একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তাদের বদলি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
গত দুই দিনে এ নিয়ে প্রশাসনে বড় রদবদল আনা হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ও হজ কার্যক্রমের মূল উপসচিবকে বদলির বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, হজ কার্যক্রম পরিচালনায় মূল দায়িত্ব পালন করে হজ অনুবিভাগ। এ অনুবিভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা হজ-১। এ শাখার দায়িত্বে ছিলেন উপসচিব আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন। এ পদে থাকাকালে গত বছরই তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তখন তাকে অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু তদবির করে তিনি সেই বদলি ঠেকিয়ে এবারও কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে এবার হজ মৌসুমের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে তাঁকে বদলি করা হলো।
সূত্র জানায়, গত বছর মন্ত্রণালয়ের প্রায় সব কর্মকর্তা শাহীনের বদলিতে খুশি হলেও ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসানের কারণে সেটি কার্যকর হয়নি। এবার সচিবকেই বদলি করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে অন্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে হজ সম্পর্কিত দক্ষ সচিবসহ অন্তত তিন কর্মকর্তাকে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে আনা হয়েছে। ধর্ম সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সচিবালয়ের সচিব হামিদ জমাদ্দার। তিনি এর আগে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ কার্যক্রম পরিচালনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। ধর্ম সচিব কাজী এনামুল হাসানকে বদলি করা হয়েছে তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক হিসেবে। উপসচিব শাহীনকে প্রেষণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল প্রডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও)-এর পরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
প্রশাসনকেন্দ্রিক একাধিক সূত্র জানায়, দক্ষ কর্মকর্তা হিসেবে কাজী এনামুল হাসানের প্রশংসা করেন অনেকেই। কিন্তু ধর্ম মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি খুশি ছিলেন না। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তার প্রত্যাশা ছিল তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে পদায়ন পাবেন। এ কারণে মন্ত্রণালয়ের কাজে মনোযোগী ছিলেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনলাইনে মিটিং করতেন। এবারও হজ-সংক্রান্ত শীর্ষ প্রশাসনিক দলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী, কয়েকজন সংসদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সচিব থাকলেও ধর্ম সচিবের নাম নেই। এ ছাড়া হজ-সংক্রান্ত সব কাজে তিনি নির্ভর করতেন উপসচিব শাহীনের ওপর। মন্ত্রণালয়ের অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারাও এসব বিষয়ে হতাশ ছিলেন। সর্বশেষ হজ প্রশাসনিক দলে সচিবের অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রশাসনের শীর্ষ মহল ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। তাই হজ মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময়েই এ সংক্রান্ত মূল টিমে পরিবর্তন আনল সরকার।
এবারের হজ কার্যক্রমে শুরু থেকেই অনেক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ মন্ত্রণালয় থেকে অন্তত ৯৮টি হজ এজেন্সিকে হাজিদের ভিসা না হওয়ার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকেও ধর্ম মন্ত্রণালয়কে হজ-সংক্রান্ত অব্যবস্থাপনার বিষয় জানিয়ে একাধিক চিঠি দেওয়া হয়েছে। এসব চিঠি সমকালের সংগ্রহে রয়েছে। বিমান সূত্র জানায়, আবুল কাশেম শাহীন নির্দিষ্ট কিছু হজ এজেন্সির জন্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দিয়ে অযাচিতভাবে সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন