- বাংলাদেশ
- চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার জনশক্তি রপ্তানিকারকরা
চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার জনশক্তি রপ্তানিকারকরা

ঘুষ, চাঁদাবাজি ও মিথ্যা মামলাসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকরা। রিক্রুটিং এজেন্সির এসব মালিক বলছেন, হয়রানির মুখে অনেকেই এ খাত থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন।
তাদের অভিযোগ, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা ঘুষ ও চাঁদার দাবি করে হয়রানি করছেন। চাঁদা না দিলে রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নজরেও আনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে এজেন্সির মালিকরা তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি বলেন, তাদের অভিযোগ আমলে নেওয়া হবে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি, কেউ অবৈধ জনশক্তি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে হয়রানি না করে সেটি দেখা হবে। তবে জনশক্তি রপ্তানির নামে অবৈধ কাজ করা যাবে না।
বেশ কয়েকজন রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকের অভিযোগ, গত মার্চে সৌদি আরবে কয়েকজন রিক্রুটিং এজেন্সি মালিককে আটক করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টিকে চাঁদাবাজির হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে এ দেশের তিনটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। তদন্তের নামে তারা বিভিন্ন জনশক্তি ব্যবসায়ীদের ডেকে নিয়ে হুমকি-ধমকি দিয়ে ঘুষ-চাঁদা দাবি করছেন। ঘুষ বা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অর্থ ও মানবপাচারসহ বিভিন্ন আইনে মামলা দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ, ডিবি বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় দেশের খ্যাতনামা ২৫ রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে একটি গায়েবি মামলা করেছে। এ মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগকারী যেমন নেই, তেমনি সরকারি অনুমোদনও নেই।
তারা বলেন, এক পুলিশ কর্মকর্তা বড় বড় রিক্রুটিং ব্যবসায়ীকে ফোন করে তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন। কেউ দেখা করতে গেলে তার বিরুদ্ধে উদ্ভট অভিযোগ তুলে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নানাভাবে হয়রানি করছেন। মোটা অংকের টাকা দিলে এই হয়রানি থেকে রেহাই মিলছে।
জনশক্তি রপ্তানিকারকদের অভিযোগ, পুলিশের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার সিন্ডিকেট এই চাঁদাবাজি ও অনৈতিককাজে লিপ্ত। তারা এ কাজে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও রিক্রুটিং এজেন্সি মেসার্স তুর্কি অ্যাসোসিয়েটসের মালিক মো. সাহাবুদ্দিনকে মাঠে নামিয়েছেন। তিনিই পুলিশের হয়ে হয়রানির মুখে থাকা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের দায়িত্ব পালন করছেন। মোটা অংকের ঘুষ বা চাঁদা দিলে সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছেন। একইভাবে সিআইডির কতিপয় কর্মকর্তা স্বপ্রণোদিত হয়ে তদন্তের নামে জনশক্তি ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বেশিরভাগেই আসে জনশক্তি খাত থেকে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট নিরসনে যখন সরকার হিমশিম খাচ্ছে, তখন চাঁদাবাজি, ঘুষ আর হয়রানিমূলক তৎপরতা চালালে জনশক্তি খাত মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এতে বাধাগ্রস্ত হতে পারে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
/এইচকে/
মন্তব্য করুন