ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম পারুল বেগম। তিনি হাতে ব্যথা নিয়ে জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ে বেসরকারি হাসপাতাল নবজাতক শিশু ও জেনারেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর স্বজন।

বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে। তিনি কসবা উপজেলার গোপীনাথপুরের কাইয়ূম মোল্লার স্ত্রী।

নিহতের জামাতা আমির হোসেন জীবন বলেন, ৫ জুন সড়ক দুর্ঘটনায় হাতে ব্যথা পান পারুল বেগম। প্রথমে তাঁকে কসবার একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর হাত ভাঙার বিষয়ে জানা যায়। রব্বানী নামে এক ব্যক্তি সেখান থেকে ফুসলিয়ে নবজাতক শিশু ও জেনারেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যান। তিনি বলেছিলেন, সাইনবোর্ডে শিশু হাসপাতাল লেখা থাকলেও সেখানে রফিকুল ইসলাম নামে ভালো অর্থোপেডিক ডাক্তার আছেন। তাঁর কথামতো ভর্তি করার পর বুধবার দুপুরে রোগীকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয়। অর্থোপেডিক সার্জন রফিকুল ইসলাম ও অ্যানেস্থেসিয়ার চিকিৎসক পীযূষ সাহা অস্ত্রোপচার শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, কিছুক্ষণ পর ভেতর থেকে এসে তাঁরা জানান, রোগীর জ্ঞান ফিরছে না। জরুরি তাঁকে পাশের হাসপাতালের আইসিইউতে নিতে বলা হয়। সেখানে পরীক্ষা করে পারুল বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। অথচ অপারেশন শুরু করার আগে রোগীর হার্টসহ সব পরীক্ষার ফলাফল ভালো এসেছিল। এ বিষয়ে অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসকদের কাছে জানতে গেলে তাঁদের আর পাওয়া যায়নি। ততক্ষণে তাঁরা হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন বলে জানা যায়। তাঁদের ভুল চিকিৎসায় আমার শাশুড়ির মৃত্যু হয়েছে। এ জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত করে ওই চিকিৎসকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমন হক সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, নবজাতক শিশু ও জেনারেল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক নারীর মৃত্যুর বিষয়ে তিনি শুনেছেন। অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয়েছিল। এর পর পারুল বেগমের আর জ্ঞান ফেরেনি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, ভুল চিকিৎসায় নারী মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই হাসপাতালে যায় পুলিশ। লাশটি উদ্ধারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।