নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন– আব্দুস সালাম মণ্ডল (৫৫), তাঁর স্ত্রী বুলবুলি বেগম (৪০), মেয়ে সোনিয়া আক্তার (২৭), ছেলে টুটুল (২৫) ও সোনিয়া আক্তারের মেয়ে মেহজাবিন (৭)।

বিস্ফোরণের পর দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন বাড়িওয়ালার ছেলে সোহাগ কাজী শেখ। তিনি জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে তাঁরা বিস্ফোরণের শব্দ শুনে ঘরে গিয়ে দেখেন, সালাম মণ্ডলসহ তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। দ্রুত উদ্ধার করে তিনি প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে তাঁদের নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। সোহাগ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তাঁদের বাড়ির সিলিংয়ে লাগানো চার্জার ফ্যানটি বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগেছে। কারণ, সিলিংয়ের ফ্যানের খুব সামান্যই অবশিষ্ট আছে। বিস্ফোরণে এটি প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এতে মনে হচ্ছে, চার্জার ফ্যানের বিস্ফোরণেই তাঁরা দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ সালাম মণ্ডলও হাসপাতালে নার্স ও চিকিৎসকদের কাছে চার্জার ফ্যান বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। 

সোহাগ কাজী শেখ জানান, দগ্ধ আব্দুস সালাম মণ্ডল পেশায় রিকশাচালক। তাঁদের গ্রামের বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুরে। তাঁর স্ত্রী বুলবুলি বেগম গার্মেন্টে চাকরি করেন। স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে তিনি কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকার মহিউদ্দিন শেখের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। বৃহস্পতিবার তাঁর মেয়ে ও নাতনি তাঁদের বাসায় বেড়াতে আসেন। মেয়ে সোনিয়া আক্তারের স্বামীর নাম সেলিম মিয়া। তিনি বিদেশে থাকেন। মেয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া এলাকায় স্বামীর বাড়িতে থাকেন।

চারদিকে দেয়াল দেওয়া টিনশেড বাড়ির ছয়টি কক্ষ ভাড়া দিয়ে রেখেছেন বাড়িওয়ালা মহিউদ্দিন শেখ। এরই একটি কক্ষে ভাড়া থাকেন রিকশাচালক সালাম মণ্ডল। যে কক্ষে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটির সবকিছু আগুনে ভস্মীভূত হয়নি। শুধু বিদ্যুতের তার যেদিক দিয়ে গেছে, তার পাশে থাকা কাপড়চোপড় পুড়ে গেছে। আগুন বাইরেও ছড়ায়নি।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম বলেন, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে একই পরিবারের নারী, শিশুসহ পাঁচজন আমাদের এখানে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে সালাম মণ্ডলের ৭০ শতাংশ, বুলবুলির ২৫ শতাংশ, সোনিয়ার ৪২ শতাংশ, টুটুলের ৬০ শতাংশ ও শিশু মেহজাবিনের ৩৫ শতাংশ মুখমণ্ডল পুড়ে গেছে। তাঁদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক ফকর উদ্দিন জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় তাঁদের কেউ খবর দেননি। তাই তাঁরা যাননি।

ফতুল্লা থানার ওসি রিজাউল হক দীপু জানান, কী থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা নিশ্চিত নয়। তবে স্থানীয়রা বলছেন চার্জার ফ্যান থেকে বিস্ফোরণ ঘটেছে।