আফছারুলের উত্তরসূরি হতে এক ডজন নেতার দৌড়ঝাঁপ

চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনকে ঘিরে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ। এই আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের উত্তরসূরি হতে এরই মধ্যে নানামুখী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত এক ডজন নেতা; যাঁদের মধ্যে প্রবীণের পাশাপাশি আছেন তরুণ নেতাও। নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে তপশিল ঘোষণা করায় সম্ভাব্য কয়েকজন প্রার্থী ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী নেতা ও যোগ্য লোককেই নৌকার টিকিট দেওয়ার কথা বলছেন চট্টগ্রাম ও দলের শীর্ষ নেতারা।

ডবলমুরিং, পাহাড়তলী ও হালিশহর নিয়ে চট্টগ্রাম-১০ আসনের টিকিট পেতে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন, সাবেক সিটি মেয়র মনজুর আলম, যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ, প্রয়াত আফছারুল আমীনের বড় ছেলে ফয়সাল আমীন, আওয়ামী লীগের সংগঠক এমএ আজিজের ছেলে সাইফুদ্দিন খালেদসহ আরও কয়েকজনের নাম বেশি শোনা যাচ্ছে।

ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত ২ জুন চট্টগ্রামের তিনবারের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীন মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে আসনটিতে আগামী ৩০ জুলাই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ৮ জুন নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তপশিল ঘোষণার পর নির্বাচনের মাঠ পর্যায়ের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছেন চট্টগ্রামের নির্বাচন কর্মকর্তারা।

কে পাচ্ছেন নৌকার টিকিট– এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা অনেকেই প্রকাশ করতে পারেন। এর অধিকার আছে সবার। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত করবেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারও হয়তো এমন কোনো চমক থাকতে পারে। তবে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, ত্যাগী ও যোগ্য নেতা, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ও পরিচ্ছন্ন কোনো নেতার হাতে উঠতে পারে নৌকার টিকিট।

প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে ফরিদ মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে অনেক বছর ধরেই মানুষের কল্যাণে নিজের উদ্যোগে সমাজসেবামূলক কাজ করে যাচ্ছি। দলের বড় কোনো দায়িত্ব পেলে কাজটা আরও ব্যাপকভাবে করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, এই আসনে বিভিন্ন কাজ করায় আমার বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। যে কারণে এর আগেও আমি এখানে দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলাম। এবারও চাইব।

ফয়সাল আমীন বলেন, এই আসনের প্রতিটি মানুষের কাছে বাবা ছিলেন একজন প্রিয় ব্যক্তিত্ব; আপন মানুষ। এখনও বাবার অনেক কাজ বাকি রয়েছে। এলাকার মানুষ ও নেতাকর্মীরা আমাকে বাবার উত্তরসূরি হতে বলছেন।

নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম তপশিল ঘোষণা করে জানান, আগামী ৩০ জুলাই ইভিএমে এ আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৪ জুলাই, বাছাই হবে ৬ জুলাই, আপিল দায়ের করা যাবে ৭ থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত। নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১১ জুলাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ জুলাই এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৩ জুলাই। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, কমিশন তপশিল ঘোষণা করায় নির্বাচনের মাঠ পর্যায়ের যাবতীয় কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্টদের নানা দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।