নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ কেটে যাওয়ার অপেক্ষায় নাগরিক প্ল্যাটফর্ম: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ফাইল ছবি
সমকাল প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১৬:৩৪ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৩ | ১৬:৩৪
এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ এখন গণতন্ত্র উত্তরণের প্রাক্কালে আছে। প্রান্তিক মানুষের কথা শুনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম নীতি সুপারিশ তৈরি করেছে এই ভরসায় যে, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, প্রতিযোগিতাপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক এবং স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। এ ভরসা থেকে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সুপারিশ রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে পিছিয়ে পড়া মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হোক।
অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও ন্যায্যতার লক্ষ্যে নাগরিক এজেন্ডা: কৃষি, শোভন কর্মসংস্থান, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও সরকারি পরিষেবা এবং পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানিবিষয়ক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বরেন। বুধবার রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে এর আয়োজন করা হয়।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘সব ধরনের রাজনৈতিক দলের কাছে এসব সুপারিশ পৌঁছে দেবে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম। এ জন্য নির্বাচন সম্পর্কিত বিভ্রান্তি, সংশয় ও উদ্বেগ কেটে যাওয়ার অপেক্ষায় তারা আছেন।
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য ও সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষিতে নিয়োজিত ৪৫ শতাংশ মানুষ জিডিপিতে মাত্র ১২ শতাংশ অবদান রাখছেন। এ পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, উৎপাদনশীলতা কম। চলতি উন্নয়ন অগ্রগতির প্রক্রিয়ায় যারা পিছিয়ে আছেন, তারা পিছিয়ে থাকলে সামনের উন্নয়ন অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের বোধোদয় না হলে বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশের ফাঁদে পড়ার শঙ্কা থেকে যাবে।
নগর পরিকল্পনাবিদ খোন্দকার নিয়াজ রহমান বলেন, লাইসেন্স না থাকলে চাইলেও কোনো প্রান্তিক কৃষক তাঁর নিজের চাষের জন্য ধান বা গমের বীজ বাড়িতে সংরক্ষণ করতে পারবেন না। কেউ লাইসেন্স পেতে চাইলে, তাঁকে যে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে, তা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যের ভিসা আবেদন ফরমের থেকেও কঠিন। ২০১৮ সালের পাস হওয়া বীজ আইন এবং কৃষি বিপণন আইন এমনই। নাগরিক সমাজ যা চায়, তার বিপরীতে এ আইন। কৃষি বিপণন আইন বলেছে, সার্টিফিকেট না থাকলে কৃষক ধান ও গমের বীজ বাড়িতে রাখতে পারবেন না।
সভা-প্রধান ও প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য ব্যবসায়ী আসিফ ইব্রাহিম বলেন, শিল্পের চাহিদামাফিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে হবে। কর্মের সঙ্গে শিক্ষার সংযোগ করতে হবে। বিআইডিএসের রিসার্চ ফেলো ড. জিন্নাত আরা বলেন, বর্তমানের শ্রমশক্তির ৪৫ শতাংশ কৃষিতে নিয়োজিত। বাংলাদেশের দারিদ্র্যসীমার নিচের মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কৃষির উন্নয়ন সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে।
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যান্ড গভর্ন্যান্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. শাহনেওয়াজ বলেন, বাংলাদেশে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিত নগরায়ণ হচ্ছে। সমস্যা তৈরি হলে সাময়িক সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এতে টাকার অপচয় হয়, কাজ হয় না। ঢাকা এখন বায়ুদূষণে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত ও ধীরগতির শহর। অথচ গত এক যুগে সরকার এ শহরের উন্নয়নে ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাকিব বিন আমিন বলেন, জ্বালানি অর্থনীতির ‘লাইফ-লাইন’। এ ক্ষেত্রে নিজেদের সম্পদের দিকে নজর না দিয়ে আমদানি করায় বেশি মনোযোগ দেওয়া হয়েছে। ৫০টি গ্যাস ব্লকের ৮০ শতাংশে কোনো অনুসন্ধান নেই। এ ধারা চললে ২০৩১ সালের পর প্রাকৃতিক গ্যাস ফুরিয়ে যাবে।