ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

এমপি আজীমের আশ্রয়দাতা গোপাল কোথায়

এমপি আজীমের আশ্রয়দাতা গোপাল কোথায়

আনোয়ারুল আজীম আনার - ফাইল ছবি

শুভজিৎ পুততুন্ড, কলকাতা

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৪ | ০১:২৬ | আপডেট: ২৯ মে ২০২৪ | ১৭:০০

ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার কলকাতায় প্রথমে ওঠেন তাঁর বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে। সেখান থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এর পর ২২ মে কলকাতার নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে আজীম খুন হন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি।

আজীমের নিখোঁজ নিয়ে ১৮ মে জিডি করেন বরানগরের ১৭/৩ মণ্ডলপাড়া লেনের বাসিন্দা গোপাল। তবে পরদিন থেকে লাপাত্তা গোপাল, তাঁর কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না গণমাধ্যমকর্মীরা।

জানা যায়, স্বর্ণের ব্যবসা সূত্রে এমপি আজীমের সঙ্গে ২৫ বছরের বন্ধুত্ব গোপালের। তাঁর সঙ্গে ১৯ মে সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে কথা বলে সমকাল। বাড়ির ঠিকানা জানাতে টালবাহানার এক পর্যায়ে গোপালই ক্যালকাটা পাবলিক স্কুলের সামনে আসতে বলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্কুলের সামনে পৌঁছলে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন গোপাল। দুটি ফোন নম্বর অনবরত বাজলেও রিসিভ হয়নি। জিডির ঠিকানা ধরে দুপুর আড়াইটার দিকে গোপালের বাড়িতে গেলে তিনি দেখা করেননি। ফ্ল্যাটের ব্যালকনি থেকে উঁকি মেরে গোপালের স্বর্ণের ব্যবসার স্টাফ পরিচয় দিয়ে একজন জানান, গোপাল চিকিৎসক দেখিয়ে চলে আসবেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যে। তবে বাড়ির নিচে আরও ৭ ঘণ্টা অবস্থান করেও তাঁর দেখা মেলেনি। সেই থেকে সংবাদমাধ্যমে আজও অধরা গোপাল।

গোপালের বাড়িতেই এসআরভি নামে তাঁর স্বর্ণের ব্যবসার অফিস। এমপি আজীম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এটি বন্ধ। গোপালের প্রতিবেশীরা তাঁর সম্পর্কে খুব একটা জানেন না।

সূত্রের দাবি, গোপালকে আসামি নয়, রাজসাক্ষী হিসেবে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁর মাধ্যমেই এ হত্যা রহস্যের প্রাথমিক জট খুলতে সক্ষম হয় সিআইডি।

পুলিশ গোপালের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, আজীম সেখানে ১২ মে প্রবেশ এবং পরদিন বেরিয়ে যান। গোপালের কাছ থেকেই প্রাথমিকভাবে তাদের ব্যবহৃত গাড়ি, চালক এবং অভিযুক্তদের সম্পর্কে ধারণা পায়।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্র জানায়, বন্ধু হিসেবে আজীমের ভারত এবং বাংলাদেশে ঘনিষ্ঠ বন্ধু এমনকি শত্রু সম্পর্কেও ভালো জানাশোনা গোপালের। তদন্ত শুরুর পর থেকে প্রয়োজনে সাড়া দেন গোপাল। ফলে তাঁকে আটক বা হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি পুলিশ। যদিও মৌখিকভাবে তাঁকে এলাকা ছাড়তে নিষেধ করেছে পুলিশ।

ওই সূত্রের দাবি, মুখ খুললে তদন্ত-সংক্রান্ত তথ্য বলে দিতে পারেন গোপাল– এমন আশঙ্কা থেকে তদন্ত কর্মকর্তারা তাঁকে চুপ থাকার পরামর্শ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, তদন্তের শুরু থেকে গোপাল আমাদের সন্দেহের ঊর্ধ্বে ছিলেন না। তবে তিনি যে ধরনের তথ্য দিয়েছেন, তাতে কোনো ভুল পাইনি। অভিযুক্ত অনেককেই চিনতেন গোপাল। ফলে তদন্ত খুব কম সময়ে দ্রুত এগিয়েছে।

সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, শুরু থেকেই সব ধরনের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছেন গোপাল। আমরা তাঁকে আড়ালে থাকার পরামর্শ দিইনি। তবে স্বাস্থ্যজনিত কারণে নিজেই কিছুটা আড়ালে আছেন। তাঁর নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টিও আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবারও গোপালের নম্বরে একাধিকবার কল দিলে রিসিভ হয়নি।

আরও পড়ুন

×