ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

ছয় সমন্বয়কের বিবৃতি

আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি স্বেচ্ছায় দিইনি

ছাত্র-জনতাকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান 

আন্দোলন প্রত্যাহারের  বিবৃতি স্বেচ্ছায় দিইনি

ডিবি হেফাজতে থাকাকালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে গত ২৮ জুলাই প্রকাশিত এক ভিডিওতে এভাবে দেখা যায়

 বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক 

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪ | ০১:১৩ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪ | ১১:০১

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয় থেকে দেওয়া আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি ছয় সমন্বয়ক স্বেচ্ছায় দেননি। এমনকি ডিবি অফিসে জোর করে খাবার টেবিলে বসিয়ে ভিডিও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক। 

ডিবি হেফাজতে থাকার সময়কার ঘটনাবলি নিয়ে শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় নেতা। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। এ সমন্বয়করা হলেন– নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আসিফ মাহমুদ, নুসরাত তাবাসসুম ও আবু বাকের মজুমদার। তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘আন্দোলন প্রত্যাহার করে ডিবি অফিস থেকে প্রচারিত ছয় সমন্বয়কের ভিডিও স্টেটমেন্টটি আমরা স্বেচ্ছায় দিইনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সিদ্ধান্ত ডিবি অফিস থেকে আসতে পারে না।  সারাদেশের সকল সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ব্যতীত কোনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গৃহীত হবে না।’  

গত ২৮ জুলাই ওই বিবৃতি প্রকাশ করে ডিবি। তখন অবশ্যই অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন, এই বিবৃতি জোর করে আদায় করা হয়। তবে ডিবি তা অস্বীকার করে।  
গতকালের বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, ‘আমাদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিবারকে ডেকে ১৩ ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় এবং মিডিয়ায় মিথ্যা স্টেটমেন্ট দেওয়ানো (দিতে বাধ্য করা) হয়। আমাদের শিক্ষকরা দেখা করতে আসলে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। যারা নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে, তাদের হেফাজতে কেউই নিরাপদে থাকতে পারে না। সরকারের কাছে আমরা এই প্রহসনের নিরাপত্তা চাই না। আমরা আমাদের ভাইবোনদের খুনের বিচার চাই।’ 

বিবৃতিতে তারা বলেন, গত মঙ্গলবার রাত থেকে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের ডিবি অফিসে আটক অবস্থায় অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সে খবর জানামাত্র সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ ও নুসরাত তাবাসসুমও অনশন শুরু করেন। অনশনের কথা পরিবার ও মিডিয়ার কাছে গোপন করা হয়।

তারা বলেন, ‘গত সাত দিন ডিবি অফিসে আমাদের ও আমাদের পরিবারের সঙ্গে নানা হয়রানি, নির্যাতন ও নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই আমাদের অন্যায়ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল। সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ছাত্র-নাগরিকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। সরকার এখনও শিক্ষার্থীদের ওপর দমননীতি অব্যাহত রেখেছে।’ 
সমন্বয়করা উল্লেখ করেন, জোরপূর্বক তুলে এনে অসাংবিধানিকভাবে তাদের আটকে রাখা হয়। ছাত্র-নাগরিক হত্যার বিচার ও আটক নিরপরাধ ব্যক্তিদের মুক্তির দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতি আহ্বান থাকবে– সরকারের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ও দমনপীড়নকে তোয়াক্কা না করে রাজপথে নেমে আসুন। শহীদের রক্ত বৃথা যাবে না। 
 
 

আরও পড়ুন

×